Table of Contents
লেখক পরিচিতি
১৯৩২ সালে নিখিল সরকার জন্ম গ্রহণ করেন ময়মনসিংহ জেলার গ্রামের গৌরীপুর গ্রামে | ময়মনসিংহ তেই নিখিল সরকার এর শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় | পরে অবশ্য তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য কলকাতা আসেন | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইতিহাস বিষয়ের ওপর স্নাতক হন | তাঁর কর্মজীবনের হাতেখড়ি হয় সাংবাদিকতার মাধ্যমে | কর্মজীবনের শুরুর দিকে তিনি যুগান্তর পত্রিকার সাথেও যুক্ত ছিলেন | সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকার সময়কালেই তার মধ্যে সাহিত্য প্রতিভার বিকাশ ঘটে | তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলির মধ্যে কয়েকটি হলো – শ্রীপান্থের কলকাতা,আজব নগরী,মেটিয়াবুরুজের নবাব,ঠগি,দেবদাসী ইত্যাদি | আজব নগরী হলো শ্রীপান্থের লেখা প্রথম গ্রন্থ , এবং বটতলা তাঁর লেখা শেষ গ্রন্থ | নিখিল সরকার ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার পেয়েছিলেন | ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে ৭৩ বছর বয়সে নিখিল সরকার-এর মৃত হয় | কঠিন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান |
সারাংশ
আজকের এই আধুনিক যুগে কালি কলমের ব্যবহার নিতান্তই সীমিত;প্রায় সবই “চৌকো আয়নার মত একটা কাচের স্ক্রিন বা পর্দা | আর তাঁর নিচে টাইপ রাইটার দের মতন কিবোর্ড |” লেখালেখির অফিস হলেও,লেখক ছাড়া আর কারোর কাছে কালি কলম খুঁজে পাওয়ার জো নেই | কালক্রমে লেখকদের অবস্থা সেই প্রবাদের মত, “কালি নেই,কলম নেই,বলে আমি মুন্সি” | প্রবন্ধকার গ্রামের ছেলে, তারা কলম তৈরি করতেন বাঁশের কঞ্চি কেটে; ‘ লেখার পাত ‘ বলতে ছিল কলাপাতা | সেটাকেই কাটছাঁট করে ‘ কাগজের মত সাইজ ‘ করে তাতেই করতেন হোমটাস্ক | স্কুলের মাস্টার মশাই তা দেখা হয়ে গেলে ছিঁড়ে ফেরত দিতেন পড়ুয়াদের -তারা সেটা ফেলে দিতেন পুকুরে | বাইরে ফেললে, গরু খেয়ে নিলে আবার অমঙ্গল | গরুকে অক্ষর খাওয়ানো নাকি পাপ ! “ বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতা “ – এই নিয়েই তাদের প্রথম লেখালেখি | তাই লেখক দের সাথে কালিকলম-এর সম্পর্ক খুবই গভীর | ফিনিশীয় হলে লেখক হয়তো কোন হার কুড়িয়ে নিয়ে কলম হিসেবে ব্যবহার করতে ন | কিংবা তিনি যদি হতেল স্বয়ং জুলিয়াস সিজার, তাও তার কারিগর বড় একটা স্টাইলাস বানিয়ে দিত, যা হত তার সম্বল | আজকাল তো বাঁশের কলম খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর ! খাগের কলম তো কেবল সরস্বতী পুজোর সময় নজরে আসে | পালকের কলম ও নেই আর | দোয়াত কলম তো কেবল সাজানোর উপকরণ আজ | এককালে পন্ডিত মশাই এর কলম খ্যাত ছিল কানে গুঁজে রাখার জন্য | যদিও কলমের দুনিয়ায় সত্তিকারের বিপ্লব ঘটায় ফাউন্টেন পেন যার আগের কালের নাম ছিল ‘ রিজার্ভার পেন ‘ | লেখক এর অবশ্য এই ফাউন্টেন পেন কেনার সুযোগ আসে বহু পরে, বাঁশ-এর পেন আর বাহারি নামের কালি বড়ি ঘরের বানানো কালি ছিল তার সম্বল | শেষ বয়স অবধি নিবের কলম কলমে লেখালেখি করতেন একমাত্র সত্যজিৎ রায় | লিপি শিল্প ছিল তার নেশা | তবে প্রবন্ধকার আজ বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন নিজে, “তুমি সবল,আমি দুর্বল | তুমি সাহসী, আমি ভীরু | তবু যদি আমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা, তবে তাই হোক | ধরে নাও, আমি মৃত | “
1. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখ:
1.1) ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনাটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
(ক) পত্রপুট
(খ) কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই
(গ) বটতলা
(ঘ) চিত্রা
উত্তর – (খ) কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই
1.2) শ্রীপান্থের আসল নাম কি ?
(ক) সুবোধ ঘোষ
(খ) অন্নদাশঙ্কর রায়
(গ) নিখিল সরকার
(ঘ) জীবনানন্দ দাশ
উত্তর – (গ) নিখিল সরকার
1.3) নিখিল সরকার রচিত একটি গ্রন্থ হল –
(ক) কঙ্কাবতী
(খ) মেটিয়াবুরুজের নবাব
(গ) মানসী
(ঘ) সবকটি
উত্তর – (খ) মেটিয়াবুরুজের নবাব
1.4) “ কালি কলম মন, লেখে তিনজন | “- এটি একটি
(ক) ধাঁধা
(খ) উপকথা
(গ) প্রবাদ
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর – (গ) প্রবাদ
1.5) লেখক যে অফিসে কাজ করেন, সেটি –
(ক) লেখালেখির অফিস
(খ) পুঁথি লেখার অফিস
(গ) গল্প খানা
(ঘ) ট্যুরিজম অফিস
উত্তর – (ক) লেখালেখির অফিস
1.6) “ কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি ______”|
(ক) লেখক
(খ) খেলোয়াড়
(গ) পন্ডিত
(ঘ) মুন্সি
উত্তর – (ঘ) মুন্সি
1.7) হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় লেখক-এর বয়স কত বলে ধারণা করা হয়েছিল ?
(ক) ৩০-৪০
(খ) ৪০-৫০
(গ) ৫০-৬০
(ঘ) ৬০-৭০
উত্তর – (গ) ৫০-৬০
1.8) লেখার পাতা হিসেবে শৈশবে লেখকদের ছিল –
(ক) বট পাতা
(খ) কলাপাতা
(গ) শাল পাতা
(ঘ) খাতা
উত্তর – (খ) কলাপাতা
1.9) কলাপাতায় হোমটাস্ক করে লেখক নিয়ে যেতেন –
(ক) টোলে
(খ) স্কুলে
(গ) গুরু মশাইয়ের কাছে
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর – (খ) স্কুলে
1.10) অক্ষরজ্ঞানহীন লোককে বলে –
(ক) ওর অক্ষরজ্ঞান শূন্য
(খ) ও একটা গরু
(গ) ও একটা গাধা
(ঘ) ওর কাছে ক অক্ষর গোমাংস
উত্তর – (ঘ) ওর কাছে ক অক্ষর গোমাংস
1.11) “ ছিড়ে পত্র না ছারে মসি “- ‘মসি’ শব্দের অর্থ কি ?
(ক) কালি
(খ) কলম
(গ) পৃষ্ঠা
(ঘ) কলমের নিব
উত্তর – (ক) কালি
1.12) লেখক যখন ছোট ছিলেন, তখন তাদের বাড়িতে কিসে রান্না করা হতো ?
(ক) LPG তে
(খ) স্টোভে
(গ) উনুনে
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর – (গ) উনুনে
1.13) কালি তৈরি করতে লাগে –
(ক) চুন
(খ) রং
(গ) ত্রিফলা
(ঘ) ফিটকিরি
উত্তর – (গ) ত্রিফলা
1.14) কড়াইয়ের তলায় কালি জমলে, তা কি দিয়ে ঘষে তোলা হতো ?
(ক) লাউ পাতা
(খ) শাল পাতা
(গ) তেতুল পাতা
(ঘ) লেবু পাতা
উত্তর – (ক) লাউ পাতা
1.15) লেখক নীলনদের তীর থেকে কি নিয়ে আসতেন ?
(ক) শলাকা
(খ) পাথর
(গ) নলখাগড়া
(ঘ) সবকটি
উত্তর – (গ) নলখাগড়া
1.16) ব্রোঞ্জের শলাকার পোশাকি নামটি কি ?
(ক) স্টাইলাস
(খ) স্টাইলিশ
(গ) ফাইলস
(ঘ) সবকটি
উত্তর – (ক) স্টাইলাস
1.17) সিজার স্টাইলাস দিয়ে আঘাত করেছিলেন –
(ক) কাসকাকে
(খ) ম্যাকবেথকে
(গ) জুলিয়াস কে
(ঘ) কোনাটিই নয়
উত্তর – (ক) কাসকাকে
1.18) ‘ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ’ – কোন বিপদের কথা বলা হয়েছে ?
(ক) লেখককে নেশাগ্রস্ত করা
(খ) যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায় না
(গ) লিখতে লিখতে পেনের নিব ভোঁতা হয়ে যাওয়া
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর – (ক) লেখককে নেশাগ্রস্ত করা
1.19) যারা ওস্তাদ কলমবাজ, তাদেরকে এককথায় কি বলা হয় ?
(ক) পন্ডিত
(খ) শিক্ষক
(গ) খোশনবিশ
(ঘ) লিপিকুশলী
উত্তর – (ঘ) লিপিকুশলী
1.20) “আমাদের মধ্যে যারা ওস্তাদ কলমবাজ তারা ওই কালো জলে ________ ঘষত | “ কি ঘষত ?
(ক) চক
(খ) চন্দন
(গ) হরিতকী
(ঘ) আমলকি
উত্তর – (গ) হরিতকী
2. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
2.1) নিখিল সরকারের ছদ্মনাম কি ?
উত্তর – নিখিল সরকার-এর ছদ্মনাম ছিল শ্রীপান্থ |
2.2) “লেখে তিনজন |”-এই ‘তিনজন’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে তিনজন বলতে কালি,কলম এবং মনকে বোঝানো হয়েছে |
2.3) “গরুকে অক্ষর খাওয়ানো ও নাকি পাপ |”- লেখকরা শৈশবে তাই কি করতেন ?
উত্তর – উদ্ধৃতাংশটি শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ থেকে নেওয়া হয়েছে | শৈশবে লেখকরা মাস্টারমশাইয়ের ফেরত দেওয়া কলাপাতার অংশটি পুকুরের জলে ফেলে আসতেন,যাতে গরু সেই পাতা খেতে না পারে এবং অমঙ্গল না হয় |
2.4) গল্পের লেখক একদিন অফিসে কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলে ‘তবেই বিপদ’ কেন বলেছিলেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পে লেখক বলেছেন যে তার অফিসে তিনি ছাড়া আর কেউ কলম ব্যবহার করেন না |আর তাছাড়া কারোর কাছে যদি তিনি কলম পানও, সেইসব ভোতা মুখের কলম দিয়ে লিখে লেখক সুখ পান না |
2.5) লেখক এর অফিসে একমাত্র লেখক ছাড়া সবার সামনে কি থাকে ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পে লেখক এর অফিসে লেখক ছাড়া বাকি সবার সামনে থাকে চৌকো আয়নার মত একটা কাচের স্ক্রিন বা পর্দা অর্থাৎ কম্পিউটার |
2.6) “ বলতে গেলে তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি “- কি কি নিয়ে তারা প্রথম লেখালেখি শুরু করেন
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পে লেখকরা মাটির দোয়াত,বাঁশের কলম, ঘরে তৈরি কালি এবং লেখার জন্য কলাপাতা এসব ব্যাবহার করতেন লেখার জন্য |
2.7) স্টাইলাস কি ?
উত্তর – ব্রোঞ্জের তৈরি সরু কাঠি যার নাম স্টাইলাস | প্রাচীনকালে এই ব্রোঞ্জের তৈরি সরুকাঠি লেখার জন্য কলম হিসেবে ব্যবহার করা হতো |
2.8) যদি লেখক-এর জন্ম মিশর-এ হত তবে তিনি কি করতেন বলেছেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পের লেখকের জন্ম যদি মিশর-এ হতো, তবে তিনি নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে নিয়ে তা কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন |
2.9) লেখক যদি ফিনিশীয় হতেন তবে তিনি কি করতেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে লেখক বলেছেন তিনি ফিনিশীয় হলে প্রান্ত থেকে হাড় কুড়িয়ে সেগুলিকে কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন |
2.10) হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত ?
উত্তর – আমাদের পাঠ্য ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পটি শ্রীপান্থ রচিত ‘কালি আছে কাগজ নেই , কলম আছে মন নেই’ গ্রন্থের অন্তর্গত |
2.11) পালকের কলম বর্তমানে দেখার জন্য কিসের উপর নির্ভর করে থাকতে হয় ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পের লেখক বলেছেন বর্তমানে পালকের কলম দেখার জন্য তৈলচিত্র বা ফটোগ্রাফারের ওপর নির্ভর করে থাকতে হয় |
2.12) পাখির পালকের কলম-এর ইংরেজি নাম কি ?
উত্তর – পাখির পালকের কলম-এর ইংরেজি নাম হল কুইল | এটি মূলত পাখির পালক থেকে তৈরি হত |
2.13) “এমনকি আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম” – এখানে কোন রোমান অধীশ্বর এর কথা জানা গিয়েছে ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পের লেখক রোমান সাম্রাজ্যের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজারের কথা উল্লেখ করেছেন |
2.14) স্টাইলাস কে নিয়ে রোমের কোন ইতিহাসের কথা লেখক উল্লেখ করেছেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পের লেখক রোমের এক ইতিহাসের কথা উল্লেখ করেছেন স্টাইলাস কে নিয়ে | সেখানে স্টাইলাস দিয়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার কাসকা কে আঘাত করেছিলেন |
2.15) বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে কে কি বলতেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে লেখক বলেছেন যে বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে লর্ড কার্জন বলতেন ‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’ |
2.16) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় কিভাবে মারা গিয়েছিলেন ?
উত্তর – তৈলক্যনাথ মুখোপাধ্যায় নিজের হাতের কলমের আঘাতে মারা গিয়েছিলেন |
2.17) খাগের কলম ও দোয়াত-এর ব্যবহার কেমন লক্ষ্য করা যায় ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে লেখক বলেছেন যে খাগের কলম ও দোয়াত -এর ব্যবহার বর্তমানে একমাত্র সরস্বতী পুজোর সময় লক্ষ্য করা যায় |
2.18) “এই নেশা আমি পেয়েছি একমাত্র শরৎ দার কাছ থেকে “ – এখানে কোন নেশার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশটি | এখানে লেখকের নিজের কথা বলেছেন, তিনি শরৎচন্দ্রের কাছ থেকে ফাউন্টেনপেন সংগ্রহের নেশা পেয়েছিলেন |
2.19) হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে সবচেয়ে দামি কলমটির মূল্য কত ছিল ?
উত্তর – ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ গল্পের সবচেয়ে দামি কলমটির মূল্য বলা হয়েছিল আড়াই হাজার পাউন্ড , যা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা |
2.20) দোয়াত কত প্রকারের হয় ?
উত্তর – শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম গল্পে লেখক নানা রকমের দোয়াত এর কথা উল্লেখ করেছেন | যেমন- মাটির দোয়াত, কাচের দোয়াত, শ্বেত পাথরের দোয়াত ,পিতলের দোয়াত, ব্রোঞ্জের দোয়াত, ভেড়ার সিং এবং সোনার দোয়াত এর কথাও বলেছেন |
3. ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :
3.1) প্রাচীনকালে গ্রামের ছেলেরা কিভাবে কলম তৈরি করত ?
উত্তর – শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে তিনি খুব নিপুণভাবে আগেকার দিনে কিভাবে গ্রামের ছেলেরা কলম তৈরি করত তার কথা উল্লেখ করেছেন | সেই সময়ে বিদ্যাচর্চার অথবা এসব লেখালেখি ব্যাপার এত সরল ছিল না | যে সময় ছাত্ররা ঘরোয়া পদ্ধতিতে বাড়িতেই কালি ও কলম তৈরি করত | সে সময়ে মূলত তাদের কলম তৈরির মূল উপাদান ছিল বাঁশের কঞ্চি | কাঁচা বাঁশের কঞ্চি কেটে নিয়ে তারপরে তার আগার অংশ প্রথমে সূচালো করে কেটে নিতে হতো | তারপরে কঞ্চির সেই সূচালো করে কাটামুখের অংশটি একটু চিরে দিতে হতো | লেখালেখি সময় কালি যেন বেশি পরিমাণে বেরিয়ে না পরে তাই মুখটা চিরে দিতে হতো | সে সময় তারা লেখালেখি করত কলা পাতার উপরে |
3.2) ফাউন্টেন পেনের জন্ম কিভাবে হয়েছিল তা আলোচনা করো |
উত্তর – শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের লেখক উল্লেখ করেছেন, লুইস এডসন ওয়াটারম্যান ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক ছিলেন | তারপরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই ফাউন্টেন পেনের বাংলায় নামকরণ করেছিলেন ঝরনা কলম | লুইস এডসন ওয়াটারম্যান এর এই ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করার পেছনেও রয়েছে এক কাহিনী | লুইস এডসন ওয়াটারম্যান ছিলেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী | একদিন তিনি তার ব্যবসার জন্য চুক্তিপত্র তৈরি করার কাজে গিয়েছিলেন এবং সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন দোয়াত এবং কলম | চুক্তিপত্র লিখতে লিখতে দোয়াত টি কালি সমেত উল্টে যায় তার ওপর | তৎক্ষণাৎ তিনি কালি খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন, এবং কালি নিয়ে ফিরে এসে তিনি জানতে পারেন যে ওই সময়ে অন্য কোন ব্যবসায়ী সেই চুক্তি পাকা করে ফেলেছেন | ফলে এই ঘটনায় বিমর্ষ হয়ে এই দোয়াত ও কলমের বিহিত করতে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন এই ফাউন্টেন পেন |
3.3) “ ভাবি, আচ্ছা আমি যদি যিশুখ্রিস্টের আগে জন্মাতাম ! “ – কোন প্রসঙ্গে লেখোকের মনে হয়েছে এমন ? যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগে জন্মালে তিনি কি করতেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের লেখকের নিজের ছোটবেলায় যেমন দোয়াত, কালি তৈরি করে, কলম তৈরি করে তারপর লিখতেন | তিনি তার এই অতীতের স্মৃতি মনে করতে করতে এমন ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন বলা চলে |
লেখক কল্পনাপ্রবণ হয়ে মনে করেছেন যে তিনি যদি যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগে জন্মাতেন,প্রাচীন মিশরে যদি তার জন্ম হতো, তবে তিনি নীল নদের তীরে গিয়ে সেখান থেকে নলখাগড়া ভেঙে নিয়ে আসতেন | তারপরে তা ভোঁতা করে তুলির মত করে নিয়ে লিখতেন | আবার যদি তার সুমেরীয় বা ফিনিশীয় সভ্যতায় জন্ম হত তাহলে তিনি প্রান্ত থেকে হাড় কুড়িয়ে নিয়ে এসে তা দিয়ে কলম বানাতেন | আবার তিনিই এই কল্পনা করেছেন যে যদি তিনি রোমান সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতেন তবে জুলিয়াস সিজারের মত স্টাইলাস ব্যবহার করতে পারতেন | এমন ভাবনার মধ্যে দিয়েই লেখক পূর্বের যুগে ফিরে যেতে চেয়েছে |
3.4) “ পালকের কলম তো দূরস্থান,দোয়াত কলমই বা আজ কোথায় ? – গল্পের লেখকের পালকের পেন সম্পর্কে কি কি বলেছেন ? দোয়াত কলম সম্পর্কে লেখ কি কি তথ্য তুলে ধরেছেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থ এর লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনা থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেয়া হয়েছে | এই রচনায় লেখক বিভিন্ন ধরনের কলম সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিয়েছেন |
পালকের কলম গুলিকে বলা হয় কুইল | এই কলম গুলি মূলত পাখি-র পালক দিয়ে তৈরি হতো | এবং পাখির পালকের এর ইংরেজি নাম ছিল কুইল | লেখক গল্পে বলেছেন খাগের কলম, বাঁশের কলম ইত্যাদি চলে যাওয়ার পরে এক সময় পুরো পালকের কলম এর আধিপত্য ছিল | এছাড়া ও তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে এই নিয়ে যে আজকে যদি কারো পালকের কলম দেখার ইচ্ছে হয়, তবে তাকে নির্ভর করে থাকতে হবে ফটোগ্রাফারের উপরে | কারণ এখন কার সময়ে আর আর ওসব মেলা দুঃসাধ্য | উনবিংশ শতকেও পালকের কলম এর প্রচলন ছিল |
লেখক তাঁর শৈশবকালে কঞ্চির কলম ও দোয়াত ব্যবহার করতেন | তিনি কালি তৈরি করে তা কাচের দোয়াতে রাখতেন | কাঁচের পোর্সেলিনের, শ্বেতপাথর এর,পিতলের আরো যে কত ধরনের দোয়াত পাওয়া যেত তার হিসেব মেলা ভার | এছাড়াও সোনার দোয়াত ও পাওয়া যেত |একসময় পরীক্ষায় ভালো ভাবে উত্তীর্ণ হলে বয়স্করা আশীর্বাদ করতেন – “তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক | “ এই বলে | এক কালে যে দোয়াত কলমের এত ব্যবহার ছিল তা আজ উধাও, এই নিয়ে লেখক আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন |