Table of Contents
লেখক পরিচিতি
আধুনিক কালের বিখ্যাত পদাতিক কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলি হল পদাতিক, অগ্নিকোণ, চিরকুট, কাল মধুমাস, ছেলে গেছে বনে, একটু পা চালিয়ে ভাই, জল সইতে ইত্যাদি। তাঁর কয়েকটি গদ্যগ্রন্থ হলো কাঁচা পাকা, টানাপোড়েনের মাঝখানে, ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন ইত্যাদি।
কবিতার সারাংশ
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় লোকটা জানলোই না কবিতায় বর্তমান দিনে মানুষের কর্ম ব্যস্ত জীবনের ও টাকা রোজগারের সম্পর্কে একটি দৃশ্য তুলে ধরেছেন বর্তমান দিনে মানুষ সবসময় নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে টাকার পিছনে ছুটে যায় তার জীবনের মূল লক্ষ্য টাকা রোজগার করা কিন্তু এই টাকা রোজগার করতে করতে মানুষ তার জীবনের অন্যান্য আনন্দ উল্লাস সব হারিয়ে ফেলেছে তার জীবনকে আর্থিকভাবে উপযোগী করতে পারে না রোজগার হয়তো করেছে কিন্তু একসময় গিয়ে তার এই রোজগারও তাকে কোনো আনন্দ সুখ এনে দিতে পারে না এই রোজগার করতে করতেই বিনা সুখে সে এক মুহূর্তেই মারা যায়।
হাতে কলমে
১.১ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর- কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম ‘পদাতিক’ (১৯৪০)।
১.২ তাঁর লেখা দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর- তাঁর লেখা দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম—কাচা পাকা’, ‘ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
২.১ ‘বাঁ দিকের বুকপকেটটা সামলাতে সামলাতে’—এখানে বাঁ দিকের বুকপকেট’—বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর- এখানে বাঁ দিকের বুকপকেট বলতে অর্থ বা টাকাকে বোঝানো হয়েছে যা আমরা বুকপকেটে রাখি।
২.২ ইহকাল পরকাল’—এই শব্দদ্বয় এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর- ইহকাল কথার অর্থ এই পার্থিব জীবন এবং পরকাল বলতে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে বোঝানো হয়েছে।
২.৩ কবিতায় লোকটির দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে কী খসে পড়ল?
উত্তর- কবিতায় লোকটির দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে জীবন খসে পড়ার কথা বলা হয়েছে।
২.৪ ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ আসলে কী? তাকে এরকম বলার কারণ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর– ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ আসলে একটি মায়াপ্রদীপ যা আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম। এখানে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ বলতে মানুষের হৃদয়কে বোঝানো হয়েছে।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর কয়েকটি বাক্যে লেখো :
৩.১ ‘লোকটা জানলই না’, পক্তিটি দুবার কবিতায় আছে। একই পঙ্ক্তিটি একাধিকবার ব্যবহারের কারণ কী?
উত্তর- উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি দুবার কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে। একই পঙ্ক্তি দুবার ব্যবহৃত হয়েছে কারণ এখানে মানুষের উপলব্ধির উপলব্ধি করতে পারি না।সীমাবদ্ধতাকে বোঝানো হয়েছে। আসলে অর্থের পিছনে ছুটতে ছুটতে আমরা মানুষের হৃদয়কে|
৩.২ কবি ‘হায় হায় কোন প্রসঙ্গে বলেছেন? কেন বলেছেন?
উত্তর- মানুষের জীবনের পরিসমাপ্তি অর্থাৎ মৃত্যু প্রসঙ্গে ‘হায়-হায়’ কথাটি বলেছেন। মানুষের হৃদয়কে না বুঝলে মানুষকে আন্তরিকভাবে ভালো না বাসলে মানবজীবনই বৃথা। এই প্রসঙ্গেই কবির এই হাহাকার ধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে।
৩.৩ কবিতাটির নামকরণ যদি হতো ‘হৃদয়’ বা ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ তাহলে তা কতটা সার্থক হতো?
উত্তর- কবিতার নামকরণ হৃদয় হলে তা কিছুটা সঠিক হতো কারণ এখানে অনুভূতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ সঠিক হতো না বলেই মনে হয়। কবিতার নরম ও শেষ চরণ অবলম্বন করে এই কবিতার নামকরণ করা হয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার অশ্রুরাশি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে আমাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। জীবনের মূলমন্ত্র হলো চলা। এই চলার পথে কখন চঞ্চলা লক্ষ্মী আমাদের সংসারে উঁকি দেন আবার কখন বিদায় নেন আগে থেকে তা আমরা বুঝতেই পারি না। অনিবার্য মৃত্যুতেই আমাদের জীবনপ্রদীপ নির্বাপিত হয়। আমাদের উপলব্ধির ধরনকে উদ্দেশ্য করেই এই কবিতার নামকরণ প্রতীকী ও ব্যঞ্জনাময়।
৩.৪ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখার যে ধরন তোমার চোখে পড়েছে তা নিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লেখো।
উত্তর-
কন্টাই, পূর্ব বর্ধমান
প্রিয় বিশ্বনাথ ,
আজ আমি আমাদের পাঠ্য তালিকাভুক্ত সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘লোকটা জানলই না’ কবিতাটি পড়লাম। এই কবিতাটি পড়ে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখার ধরন সম্বন্ধে আমার যে ধারণা হলো তা তোকে জানাচ্ছি।
পদাতিক কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় জীবনের এক একটা সমস্যার প্রতি আলোকপাত করেন। এই কবিতাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ জাতীয় গদ্য কবিতায় ভাবের প্রাধান্য থাকে তা এখানে উপলব্ধ হয়েছে। সর্বোপরি মানবহৃদয়ে অনুভূতির ভূমিকা অত্যন্ত সুন্দরভাবে কবি ফুটিয়ে তুলেছেন। তুই কবিতাটি পড়ে তোর মতামত জানাস।
ইতি
মহর্ষি সরকার
বিশ্বনাথ মুখার্জি
বাগুইহাটি ,নাগেরবাজার
কলকাতা-700-012
৪. ‘অথচ’ শব্দটিকে ব্যাকরণের ভাষায় কী বলি? কবিতায় এই ‘অথচ’— শব্দটির প্রয়োগ কবি কেন করেছেন?
উত্তর– ‘অথচ’ শব্দটিকে ব্যাকরণে অব্যয়পদ বলে। কবিতায় ‘অথচ’ শব্দটিকে কবি ব্যবহার করেছেন বাক্যান্বয়ী অব্যয় হিসাবে সেখানে একটি বিকল্প অনুভূতির কথা বলা হয়েছে।
৫. ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ পঙ্ক্তিটিতে মোট কটি দল? রুদ্ধদল এবং মুক্তদলের সংখ্যাই বা কত?
উত্তর- ‘আলাদিনের আশ্চর্য-প্রদীপ’ পঙ্ক্তিটিতে মোট ৯টি দল আছে। রুদ্ধদলের সংখ্যা- ৪ এবং মুক্তদলের সংখ্যা-৫ যথা—’আলাদিনের আশ্চর্য-প্রদীপ’।
৬. কবিতার মধ্যে অসমাপিকা ক্রিয়ার সংখ্যা ক’টি ও কী কী?
উত্তর- কবিতায় মোট সাতটি অসমাপিকা ক্রিয়া আছে। সেগুলি হলো (১) সামলাতে (২) সামলাতে (৩) দিলেই (৪) ঢুকতে (৫) গিলতে (৬) গিলতে (৭) খসে।
অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
১. লোকটির ইহকাল পরকাল কি করতে করতে কেটে গেল?
উত্তর- বাঁ দিকের বুক পকেটটা সামলাতে সামলাতে লোকটি র ইহকাল পরকাল কেটে গেল|
২. লোকটি যদি আরেকটু নিচে হাত দিত তাহলে সে কি খুঁজে পেত ?
উত্তর- যদি সে তার বাঁ দিকের বুকপকেটে আরেকটু নিচে হাত দিত তাহলে সে আলাদিনের-আশ্চর্য-প্রদীপ খুঁজে পেত |
৩. কবিতাটিতে কড়ি গাছের সাথে কিসের তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর- কবিতাটিতে করি গাছের সাথে ধন-সম্পদ অর্থের তুলনা করা হয়েছে|
৪. লোকটি সারাজীবনে কি জানতে পারি নি ?
উত্তর- লোকটি সুখ আনন্দের অনুভূতি জানতে পারেনি তার সারা জীবনে|