Table of Contents
লেখক পরিচিতি
১৯০৯ সালে সুবোধ ঘোষের জন্ম হয় বিহারের হাজারীবাগে | তার আদি বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার বিক্রমপুরের বহর গ্রামে | তিনি ছিলেন বিশিষ্ট একজন বাঙালি লেখক ও কথা সাহিত্যিক | সুবোধ ঘোষ ছিলেন হাজারীবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজের ছাত্র | বাংলা সাহিত্য জগৎতে তার আগমন একটু দেরিতে হলেও তার বুদ্ধি, মেধা, চিন্তা শক্তির মাধ্যমে অসাধারণ সব রচনা উপহার দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের জগৎতকে | সুবোধ ঘোষের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল বিহারে বাসের কন্ডাক্টর হিসেবে | এরপর অবশ্য তিনি আরও বিভিন্ন রকমের পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন | সার্কাস-এর ক্লাউন থেকে শুরু করে বেকারির ব্যবসা, এমন অনেক কাজই করেছেন তিনি | তিরিশের দশকে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবার বাসীয় বিভাগে সহকারি হিসেবে যোগদান করেছিলেন | এরপরে তরুণ সাহিত্যিকদের বৈঠকে তার বন্ধুদের অনুরোধে তিনি দুটি গল্প লিখেছিলেন, ‘ অযান্ত্রিক’ এবং ‘ফসিল’ | এই গল্প দুটি বাংলা সাহিত্যের সেসময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল | তার লেখা প্রথম গল্পের নামই ‘অযান্ত্রিক’ | শুধু গল্পকার হিসেবে নয়, ঔপন্যাসিক হিসেবেও তার যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে | তার লেখা কিছু ছোট গল্পের নাম হল – জতুগৃহ , অযান্ত্রিক , ফসিল , থির বিজুরি ইত্যাদি | এছাড়াও তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রচনা হল – গঙ্গোত্রী, ভালোবাসার গল্প , শতকিয়া ইত্যাদি | এবং তার লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাস-এর নাম হল- ‘তিলাঞ্জলি’ |
সারাংশ
শহরের সব থেকে সরু গলিতে বাস হরিদা’র | সেখানে ছোট একটা ঘরেই তার জীবন – সংসার | সেটাই লেখকদের সকাল সন্ধ্যার আড্ডার ঘর | অত্যন্ত গরীব হরিদা – কিন্তু তাও কোন কাজ করে উপার্জনের তাগিদ তার মধ্যে নেই | যেন তার প্রাপ্যের মধ্যেই কোন বাধা আছে কাজ করতে | একঘেয়ে অভাবকে সহ্য করতে হরিদার আপত্তি নেই, তবে একঘেয়ে কাজ ! নৈব নৈব চ |
হরিদার জীবনের পেশাটাই , তার জীবনের সবথেকে নাটকীয় বৈচিত্র | হরিদা ‘বহুরূপী’ সেজে মাঝে মাঝে রাস্তায় বের হন ; কখনো উন্মাদ পাগল কিংবা কখনো বাইজি, কখনো কাপালিক, কোন দিন বাউল – এভাবেই যা রোজগার হয়, তাতে হাড়ি চলে যায় হরিদার | এবার তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসে থেকে সেই গল্প সোনা মাত্রই হরিদা লেখককে বললেন – আজ সন্ধ্যায় তিনি এক জবর খেলা দেখাবেন | হরিদার কথায় – “ এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভান্ডার ” |
কিন্তু লেখকরা তখন ও বোঝেননি যে হরিদা ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছেন |
সেইদিন সন্ধ্যাবেলা এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে | জগদীশ বাবুর বাড়িতে দেখা যায় এক বিরাগীকে | কমন্ডুল নেই, চিমটে নেই, মৃগচর্মের আসন ও নেই – এমন এক আগন্তুক | আগন্তুক -এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জন্মায় জগদিশ বাবুর | আশ্রয় গ্রহণ করতে বলেন তার বাড়িতে | কিন্তু বিরাগী তা অগ্রাহ্য করে চলে যাওয়ার উপক্রম হন | জগদীশবাবু তখন বিরাগীর পায়ের কাছে একশো টাকা প্রণামী রেখে, সেটা গ্রহণ করার অনুদান জানান | কিন্তু তাতেও বিরাগী কেবলই হাসেন এবং সব টাকা ফেলেই চলে যান | ঠিক যেমন তিনি অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারেন | তার বুকেই সকল তীর্থ | পরবর্তীতে হরিদার বাড়িতে লেখকরা ঢুকেই বুঝতে পারেন – যে সন্ধ্যার বিরাগীই হরিদা | তারা যখন জানতে চাইলো যে হরিদা কেন টাকাগুলো নিলেন না, উত্তরে তিনি বললেন – “ শত হোক, একজন বিরাগী হয়ে টাকা ফাকা কি করে স্পর্শ করি বল ? “
1. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখ :
1.1) ‘বহুরূপী’ গল্পটির লেখক হলেন –
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) জগদীশচন্দ্র বসু
(গ) সুবোধ ঘোষ
(ঘ) জয় গোস্বামী
উত্তর – (গ) সুবোধ ঘোষ
1.2) জগদীশ বাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসি কতদিন ছিলেন ?
(ক) ছদিন
(খ) আট দিন
(গ) সাত দিন
(ঘ) দশ দিন
উত্তর – (গ) সাতদিন
1.3) জগদীশ বাবুর বাড়িতে আসন্ন সন্ন্যাসি সারা বছর কি খেয়ে কাটাতেন ?
(ক) জল
(খ) বাতাস
(গ) দুধ ও সাবু
(ঘ) একটি হরিতকী
উত্তর – (ঘ) একটি হরিতকী
1.4) হরিদার আক্ষেপের কারণ কি ছিল ?
(ক) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো না নিতে পারা
(খ) সন্ন্যাসী না হতে পারা
(গ) সন্ন্যাসী না সাজতে পারা
(ঘ) উপরের সব কটি
উত্তর – (ক) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো না নিতে পারা
1.5) জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলায় কি ফেলেছিলেন ?
(ক) ১০০ টাকা
(খ) জুতো
(গ) কলম
(ঘ) হরিতকী
উত্তর – (ক) ১০০ টাকা
1.6) সন্ন্যাসীকে নতুন খড়ম কে দিয়েছিলেন ?
(ক) ভবতোষ
(খ) অনাদি
(গ) জগদিশবাবু
(ঘ) হরিদা
উত্তর – (গ) জগদীশবাবু
1.7) সন্ন্যাসী কাকে নিজের পায়ের ধুলো দিয়েছিলেন ?
(ক) জগদীশবাবু কে
(খ) ভবতোষ কে
(গ) হরিদা কে
(ঘ) অনাদিকে
উত্তর – (ক) জগদীশবাবু কে
1.8) কথকদের আড্ডাখানার জায়গা ছিল-
(ক) জগদিশবাবুর বাড়ি
(খ) হরিদার ঘর
(গ) পাড়ার মোড়
(ঘ) রাস্তার শেষ মাথা
উত্তর – (খ) হরিদার ঘর
1.9) হরিদার ঘরে মোট কতজন আড্ডা দিত ?
(ক) পাঁচ জন
(খ) ছজন
(গ) সাত জন
(ঘ) চারজন
উত্তর – (ঘ) চারজন
1.10) কোন বিষয় নিয়ে হরিদার ভয়ানক আপত্তি ছিল ?
(ক) এক ঘেযে কাজ করাতে
(খ) গল্প শোনাতে
(গ) বহুরূপী সাজতে
(ঘ) সবকটি
উত্তর – (ক) এক ঘেযে কাজ করাতে
1.11) বিচিত্র সব ছদ্মবেশ ধারণ করে বহুরূপী সাজতে দেখা যেত কাকে ?
(ক) অনাদিকে
(খ) ভবতোষকে
(গ) হরিদা কে
(ঘ) জগদীশবাবু কে
উত্তর – (গ) হরিদা কে
1.12) “খুব হয়েছে হরি, এইবার সরে পড়ো | অন্যদিকে যাও | “ – এ কথা কে বলেছেন ?
(ক) অনাদি
(খ) জগদীশবাবু
(গ) কাশীনাথ
(ঘ) স্কুলের মাস্টারমশাই
উত্তর – (গ) কাশীনাথ
1.13) পাগলকে দেখে আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল কোথায় ?
(ক) হরিদার বাড়িতে
(খ) বাজারে
(গ) দোকানে
(ঘ) বাসস্ট্যান্ডের কাছে
উত্তর – (ঘ) বাসস্ট্যান্ডের কাছে
1.14) বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার কত রোজগার হয়েছিল ?
(ক) আট আনা
(খ) আট টাকা
(গ) আট টাকা দশ আনা
(ঘ) দশ টাকা
উত্তর – (গ) আট টাকা দশ আনা
1.15) হরিদা কোন ছদ্মবেশে লিচু বাগানে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিল ?
(ক) পুলিশ
(খ) বাইজি
(গ) মাস্টারমশাই
(ঘ) কাবুলিওয়ালা
উত্তর – (ক) পুলিশ
1.16) লিচু বাগান কার ছিল ?
(ক) দয়ালবাবুর
(খ) জগদীশবাবুর
(গ) ভবতোষ এর
(ঘ) স্কুলের মাস্টারমশাই-এর
উত্তর – (ক) দয়াল বাবুর
1.17) “ ঘুষ নিয়ে তারপর মাস্টারমশাইয়ের অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন সেই নকল পুলিশ হরিদা | “ – নকল পুলিস হরিদার ঘুষের পরিমাণ কত ছিল ?
(ক) পাঁচ আনা
(খ) সাত আনা
(গ) আট আনা
(ঘ) আট টাকা
উত্তর – (ঘ) আট টাকা
1.18) হরিদা বহুরূপী সেজে সপ্তাহে কতবার বাইরে যান ?
(ক) একদিন
(খ) চারদিন
(গ) দুদিন
(ঘ) তিনদিন
উত্তর – (ক) একদিন
1.19) হরিদা বাইজি সাজলে, তাকে একটা সিকি কে দিয়েছিলেন ?
(ক) ভবতোষ
(খ) জগদীশবাবু
(গ) দয়ালবাবু
(ঘ) মাস্টারমশাই
উত্তর – (খ) জগদীশবাবু
1.20) “ তোমরা সেখান থেকো “ – ‘সেখানে’ বলতে কোথায় বোঝানো হয়েছে ?
(ক) মাঠে
(খ) বাজারে
(গ) জগদীশবাবুর বাড়িতে
(ঘ) বাসস্ট্যান্ডে
উত্তর – (গ) জগদীশবাবুর বাড়িতে.
2. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
2.1) জগদীশবাবু কিভাবে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষ-এর লেখা ‘বহুরূপী’ রচনায় কাঠের খড়ম-এ সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের সামনে ধরলে, তবে সন্ন্যাসী জগদীশবাবুকে পায়ের ধুলো দিয়েছিলেন |
2.2) “ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস “ – কিসের প্রসঙ্গে এমন কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ রচনা থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে | এখানে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলোর কথা বলা হয়েছে |
2.3) “ সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন “ – তিনি কি দেখে হেসেছিলেন ?
উত্তর – উদ্ধৃত অংশটি সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ রচনার অংশ বিশেষ | সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর হাতে 100 টাকার একটি নোট দেখে হাসলেন |
2.4) হরিদা কি সেজে স্কুলের কতজন ছাত্রকে ধরেছিল ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা পুলিশ সেজে স্কুলের চারজন ছাত্রকে ধরেছিল |
2.5) কেমন ধরনের কাজ হরিদার পছন্দ ছিল না?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পের চরিত্র হরিদার অফিসের কাজ বা দোকানদারের কাজ পছন্দ ছিল না |
2.6) “ কি অদ্ভুত কথা বলেন হরিদা ! “ – হরিদা কোন কথাকে অদ্ভুত বলা হয়েছে ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা বলেছিলেন যে শত হোক একজন বিরাগী সন্ন্যাসী সেজে টাকা ফাঁকা রোজগার করলে তার ঢং নষ্ট হয়ে যায় | তার এই কথা কেই অদ্ভুত বলা হয়েছে |
2.7) “ নইলে আমি শান্তি পাবো না “ – কে কি করলে তিনি শান্তি পাবেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে এখানে জগদীশবাবুর একান্ত ইচ্ছা যে বিরাগী সন্ন্যাসী তাকে কিছু উপদেশ দিয়ে প্রস্থান করলে তবে তিনি শান্তি পাবেন |
2.8) “ পরম সুখ কাকে বলে জানেন ? “ – এখানে ‘পরমসুখ’ বলতে কি বোঝাতে চেয়েছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষ-এর লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে বিরাগী স্বয়ং জগতের সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া কেই ‘পরম সুখ’ বলেছেন তিনি |
2.9) “ জগদীশবাবুর 2 বিস্মিত চোখ অপলক হয়ে গেল “ – কি দেখে জগদীশবাবুর অবস্থা এমন হয়েছিল ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু যখন সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেছিলেন আদুর গায়ে সাদা উত্তরীয় পড়ে এক বিরাগী তার সামনে দাঁড়িয়ে, তখন তিনি অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন |
2.10) “ আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড় ? “ – বক্তা একথা কাকে বলেছিলেন ?
উত্তর – উদ্ধৃতাংশটি সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পের অংশ, এখানে গল্পে বর্ণিত বিরাগীর ছদ্দবেশী হরিদা জগদীশবাবুকে একথা বলেছিলেন |
2.11) “ এটা আমার প্রাণের অনুরোধ , “ – বক্তা কে ? তিনি কোন অনুরোধের কথা বলেছেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হলেন জগদীশবাবু | তিনি তার বাড়ীতে আশা বিরাগীকে কয়েকটি দিন থেকে যেতে অনুরোধ করেছিলেন, এই অনুরোধ কেই তিনি তার প্রাণের অনুরোধ বলে উল্লেখ করেছেন |
2.12) জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য কত টাকা বিরাগী কে দিতে চেয়েছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষ-এর লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু বিরাগীকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য 100 টাকা দিতে চেয়েছিলেন |
2.13) “ হরিদার কাছে আমরা এই গল্প করে বললাম “ – কিসের গল্পের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী রচনায় জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন,সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছিল হরিদাকে | এই গল্পের কথাই উদ্ধৃতাংশ-এ বলা হয়েছে |
2.14 ) কোন বহুরূপীর সাজে বেশি রোজগার হয়েছিল হরিদার ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা রূপসী সাজে বাইজি সেজে দোকানে দোকানে গিয়ে ফুলের সাজি এগিয়ে দিচ্ছিল, এই সাজেই রোজগার একটু বেশি হয়েছিল |
2.15) পুলিশ সেজে হরিদা কি করেছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী গল্পে হরিদা পুলিশ সেজে একবার দয়ালবাবুর লিচুবাগানে দাঁড়িয়েছিল আর সেখান থেকে চারজন স্কুলের ছেলেকে ধরেছিল |
2.16) ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে স্কুল-এর মাস্টারমশাই কি করেছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে স্কুলের ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে স্কুলের মাস্টারমশাই ছদ্দবেশী পুলিশকে আটাআনা ঘুষ দিয়েছিলেন |
2.17) স্কুলের মাস্টারমশাই যখন জানতে পেরেছিলেন যে হরিদা পুলিশ সেজে তাদের বোকা বানিয়ে ছিলেন তখন তিনি কি করেছিলেন ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী গল্পে যখন স্কুলের মাস্টারমশাই জানতে পেরেছিলেন যে হরিদা পুলিশ-এর ছদ্মবেশে তাদের বোকা বানিয়েছিলেন , তখন তিনি একটুও রাগ না করে বরং হরিদার সাজের প্রশংসা করেছিলেন |
2.18) হরিদার ঘরটি কেমন ছিল এবং সেখানে কি কি হত ?
উত্তর – সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার ঘরটি ছিল সরু এক গলির মধ্যে | তার ঘরটি ছিল ছোট মত | সেখানে সন্ধ্যা বেলাতে লেখকদের আড্ডা বসতো |
3. রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :
3.1) “ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস | “- কোন জিনিসের কথা বলা হয়েছে ? সে জিনিস দুর্লভ কেন ?
উত্তর – বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু হলেন একজন ধনী ব্যক্তি | তার বাড়িতে যে সন্ন্যাসীর আগমন হয়েছিল, তার পায়ের ধুলোর কথা বলা হয়েছে এখানে | সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ছিল ভয়ানক দুর্লভ জিনিস |
পুণ্য অর্জনের বিষয়ে ধনী জগদীশবাবু অত্যন্ত হিসেবি ছিলেন | তিনি বলেছিলেন যে,তার বাড়িতে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন তিনি নাকি হিমালয়ের গুহায় থাকেন, এবং সারা বছর শুধু মাত্র একটি হরিতকী খেতেন | এরকম একজন পুণ্যবান সন্ন্যাসীর সেবা করলেও যে অনেক পূণ্য অর্জন করা যাবে সে কথা জগদীশবাবু ভালো করেই জানতেন | তাই জগদীশবাবু সন্ন্যাসী মূল্যবান পদধূলি যাতে অন্য কেউ না পায় তার জন্য তিনি একজোড়া কাঠের খড়ম-এ সোনার বোল লাগিয়ে নিয়ে এসে সেই সন্ন্যাসীর পায়ের সামনে ধরেন | সন্ন্যাসী সেই খড়ম পায়ে দেওয়া মাত্রই জগদীশবাবু তার পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন | এই কারণেই বলা হয়েছে যে সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ‘ভয়ানক দুর্লভ’ জিনিস |
3.2) “ হরিদার উনানের হাড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে, ভাত ফোটে না | “- হরিদার জীবিকা কি ছিল ? তার হাড়িতে কেন কেবল জলেই ফোটে অনেক সময় ?
উত্তর – উদ্ধৃতাংশ প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের রচনা ‘বহুরূপী’ থেকে নেওয়া হয়েছে | গল্পে হরিদা কে মুখ্য চরিত্র বলা চলে | তিনি হলেন একজন বহুরূপী | গতানুগতিক অফিসের কাজ বা দোকান চালানো কোন কাজই তার ঠিক ভালো লাগলো না | তাই তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাজে সেজে নেমে পড়তেন মানুষকে মনোরঞ্জন করতে | এভাবেই তিনি তার জীবিকা নির্বাহ করতেন |
হরিদার জীবন দর্শন ছিল অন্য, যা আর পাঁচটা মানুষের সাথে মিল ছিল না | দশটা পাঁচটা বাধা মাইনে করা চাকরিতে তার ছিল প্রচন্ড রকমের অনীহা | তা না হলে চেষ্টা করলে অবশ্যই তার একটা না একটা স্থায়ী কাজ ঠিকই জুটে যেত | কিন্তু সেসব দিকে যেতে চাননি হরিদা | তিনি বহুরূপী সেজে মানুষ কে আনন্দ দিয়ে যা উপার্জন করতেন তা দিয়েই তার দিন অতিবাহিত হয়ে যেত | কিন্তু তিনি শুধুমাত্র সপ্তাহের একটি দিনই বহুরূপী সেজে বের হতেন মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য | আর এতে খুব অল্পই উপার্জন হতো | তাই অনেক সময়ে তার উনুন-এর উপরে শুধু জলই ফুটত , ভাত নয়, অভাব-অনটনের তারনায় |
3.3) হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ? তিনি কাকে কিভাবে বোকা বানিয়েছিলেন ?
উত্তর – বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ-এর লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পের মুখ্য চরিত্র বহুরূপী হরিদা পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন |
বহুরূপী হরিদা নকল পুলিশ সেজে স্কুলের মাস্টারমশাই কে বোকা বানিয়েছিলেন |
স্কুল থেকে চারটি ছেলে গিয়েছিল দয়ালবাবুর লিচু বাগানে লিচু চুরি করে খেতে | কিন্তু সেখানে আগে থেকেই পুলিশের সাজে দাঁড়িয়েছিল হরিদা | পুলিশকে দেখে স্কুলের ছেলেরা ভয়ে কান্না করে ফেলেছিল | পরে স্কুলের মাস্টার মশাই পুলিশরুপি হরিদার কাছে ক্ষমা চেয়ে ছেলেগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন | কিন্তু হরিদা মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ছেলেগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আট আনা ঘুষ নিয়েছিলেন | তারপরই ছেলেগুলোকে ছেড়েছিলেন | এভাবেই হরিদা পুলিশ সেজে মাস্টারমশাই কে বোকা বানিয়েছিলেন | পরে অবশ্য মাস্টারমশাই জানতে পেরেছিলেন যে হরিদা তাকে বোকা বানিয়েছিল, কিন্তু তিনি একটুও রাগ না করে বরং হরিদার সাজের প্রশংসা করেছিলেন |