সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১. মাটির নাইট্রোজেনের উৎস হল – গ্যাসীয় নাইট্রোজেন/ অ্যামোনিয়া/ ইউরিয়া/ নাইট্রেট লবন ।
উত্তর: নাইট্রেট লবন।
২. নিচের কোনটি মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া ? – অ্যাজোটোব্যাকটর/ অ্যানাবিনা/ রাইজোবিয়াম /স্পাইরুলিনা ।
উত্তর: রাইজোবিয়াম।
৩. কোনটি শিল্পজাত রাসায়নিক সার ? – ইউরিয়া/ গোবর/ হিউমাস /খইল ।
উত্তর: ইউরিয়া।
৪. নাইট্রিফিকেশন এ সাহায্য করে – ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস/নাইট্রোব্যক্টর/অ্যাজোটোব্যাকটর/অ্যাজোলা।
উত্তর: নাইট্রোব্যাক্টর।
৫. ডিনাইট্রিফাইং জীবাণু হল – নাইট্রোব্যক্টর/ অ্যাজোটোব্যাক্টর অ্যানাবিনা/ সিউডোমোনাস।
=সিউডোমোনাস।
৬. কোনটি কীটনাশক ? – ক্যাডমিয়াম/ফেনোল/BHC/H2SO4.
উত্তর: BHC.
৭. বধির হয়ে যাওয়ার একটি বিশেষ কারণ হলো – জলদূষণ/ খনিজ দূষণ/ বায়ু দূষণ /শব্দ দূষণ।
উত্তর: শব্দ দূষণ।
৮. একটি আগাছা নাশক হলো – DDT/ 2, 4- D/ BHC / ইউরিয়া ।
উত্তর: 2 ,4-D
৯. নিচের কোনটি জলজ সম্পদ? – মুরগি/ মুক্তা ঝিনুক/ মেষ/ হাঁস।
উত্তর: মেষ।
১০. কোন দূষণের ফলে হাঁপানি হয় ? – বায়ু দূষণ /শব্দ দূষণ /জল দূষণ/ বনদূষণ।
উত্তর: বায়ু দূষণ।
১১. নিচের কোনটি ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি ? – ফিজিওথেরাপি /কেমোথেরাপি/ অ্যান্টিবায়োটিক /যোগাসন।
উত্তর: কেমোথেরাপি।
১২. কুইনাইন কোন রোগের ওষুধ ? – অ্যাজমা/ টাইফয়েড/ নিউমোনিয়া/ ম্যালেরিয়া।
উত্তর: ম্যালেরিয়া।
১৩. কোনটি জীব বৈচিত্র হ্রাসের প্রধান কারণ ? – জল দূষণ /চোরাশিকার/ শব্দ দূষণ /প্রাণীদের রোগ ।
উত্তর: চোরাশিকার।
১৪. সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে কোন গাছের আধিক্যের জন্য ? – সুন্দরী /গরান/ গেওয়া/ গোলপাতা ।
উত্তর: সুন্দরী।
১৫. নিচের কোনটি সুন্দরবনের প্রধান প্রাণী যা সংরক্ষণযোগ্য ? – রয়েল বেঙ্গল টাইগার/ কুমির/ কেটো কচ্ছপ /ময়াল ।
উত্তর: রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১৬. পশ্চিমবঙ্গের কোন অভয়রণ্য এ গন্ডার সংরক্ষণ করা হয়েছে ? – সুন্দরবন/ জলদাপাড়া/ গুজরাটের গির /অসমের কাজিরাঙা।
উত্তর: জলদাপাড়া।
১৭. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন হলো- অভয়ারণ্য/ জাতীয় পার্ক/ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ /সংরক্ষিত বন।
উত্তর: জাতীয় পার্ক।
১৮. ক্রায়ো সংরক্ষণ এ উদ্ভিদে নমুনা কত তাপমাত্রায় সংরক্ষিত হয় ? – 0°C/ (-190°C)/ (-1°C)/ (-5°C).
উত্তর: (-190°C)
১৯. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন ছাড়া আর কোথায় ব্যাঘ্র প্রকল্প আছে ? – বেথুয়াডহরী/ গরুমারা/ জলদাপাড়া/ বক্সা।
উত্তর: বেথুয়া ডহরি।
২০. সিকিমে কোন প্রাণী সংরক্ষণ করা হয় ? – বানর/ গন্ডার/ রেড পান্ডা/ বাঘ।
উত্তর: রেড পান্ডা ।
২১. মাটিতে বসবাসকারী একটি স্বাধীন জিবি নাইট্রোজেন স্থিতিকারী ব্যাকটেরিয়া হল – অ্যানাবিনা/ ল্যাকটোব্যাসিলাস/ ক্লস্ট্রিডিয়াম/ নষ্টক।
উত্তর: ক্লসট্রিডিয়াম।
২২. ছোলা গাছের মূলের মধ্যে উপস্থিত মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া হল – রাইজোবিয়াম/ সালমনেলা টাইফি/ ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস/নাইট্রোকক্কাস ।
উত্তর: রাইজোবিয়াম ।
২৩. নাইট্রোজেনের অক্সাইড গুলির মধ্যে প্রধান বায়ুদূষক হলো – NO এবং N2O/ NO এবং NO2/ NO2/ NO
উত্তর: NO এবং NO2
২৪. এরোসেল, স্মোগ ও PAN হলো – জলদূষক /বায়ুদূষক/ শব্দদূষক/ মৃত্তিকাদূষক।
উত্তর: বায়ু দূষক।
২৫. যানবাহন নিঃসৃত একটি দূষক পদার্থ হল – স্মগ / PAN/এরোসল/সবকটি।
উত্তর: PAN
২৬. পানীয় জলে আর্সেনিকের সহনশীল মাত্রা – 0.05 mg/lit / 0.002 mg/lit / 0.5 mg/lit / 0.2 mg/lit .
উত্তর: 0.05 mg/lit
২৭. ইউট্রিফিকেশন এর ফলে বৃদ্ধি পায় – ছত্রাক /প্রোটোজোয়া/ প্ল্যাংকটন/ শৈবাল।
উত্তর: শৈবাল।
২৮. জলদূষণের ফলে ঘটে – বসন্ত রোগ /হাঁপানি/ ডায়াবেটিস/ টাইফয়েড।
উত্তর: টাইফয়েড।
২৯. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে – ওজোন/ অক্সিজেন/ মিথেন/ অ্যামোনিয়া।
উত্তর: ওজোন ।
৩০. বায়ুমন্ডলে সর্বাধিক যে গ্যাসটি থাকে সেটি হল – কার্বন-ডাই-অক্সাইড/ অক্সিজেন/ হাইড্রোজেন/ নাইট্রোজেন।
উত্তর: নাইট্রোজেন।
৩১. যে মাত্রায় বেশি শব্দ দূষণ সৃষ্টি হয় সেটি হল – 60 dB/80 dB/100 dB /120 dB.
উত্তর: 80 dB.
৩২. পারদ দূষণের ফলে যে রোগটি হয় সেটি হল – ব্ল্যাক ফুট ডিজিজ/ ব্লু বেবি সিনড্রোম/ হেপাটাইটিস/ মিনামাটা।
উত্তর: মিনামাটা ।
৩৩. ব্রংকাইটিস রোগে আক্রান্ত অঙ্গটি হলো – বক্ষগহ্বর/ বৃক্ক/ ত্বক/ শ্বাসপথ।
উত্তর: শ্বাসপথ।
৩৪. ঝালাই কর্মীদের সাধারণত যে রোগ হয় – সিলিকোসিস/ অ্যানিমিয়া/ বংক্রাইটিস/ বর্ণান্ধতা।
উত্তর: ব্রংকাইটিস।
৩৫. কোনটি অ্যাজমা রোগের জন্য দায়ী নয় – উদ্ভিদের পরাগ রেণু/ প্রাণীর মল/ প্রোটোজোয়া/ ছত্রাক।
উত্তর: প্রোটোজোয়া।
৩৬. ভারতবর্ষে বর্তমানে সিংহ পাওয়া যায় – গির অরণ্যে/ সুন্দরবনে/ কাজিরাঙ্গা/ জলদাপাড়া ।
উত্তর: গির অরণ্য।
৩৭. ক্রায়ো সংরক্ষণ এ জাম প্লাজম সংরক্ষণ করা হয় – (-80°C)/(-150°C)/(-196°C)/(-10°C).
উত্তর: (-196°C)
৩৮. কোর অঞ্চল যে অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সেটি হল – জলাশয়/ জাতীয় উদ্যান/ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ /অভয়ারণ্য।
উত্তর: বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
৩৯. ইনসিটু সংরক্ষণ নয় – অভয়ারণ্য / জাতীয় উদ্যান/ সংরক্ষিত বনাঞ্চল /চিড়িয়াখানা।
উত্তর: চিড়িয়াখানা।
৪০. এক্স সিটু সংরক্ষণ নয় – চিড়িয়াখানা/ জাতীয় উদ্যান/ উদ্ভিদ উদ্যান /সিড উদ্যান ।
উত্তর: জাতীয় উদ্যান।
৪১. ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান হলো – গির/ করবেট/ সুন্দরবন /জলদাপাড়া।
উত্তর: করবেট।
৪২. সুন্দরবনের পরিবেশগত সমস্যা নয় – মিষ্টি জলের সংকট/ জনসংখ্যা বৃদ্ধি/ দূষণ/ সুন্দরী গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি ।
উত্তর: সুন্দরী গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি।
৪৩. ভারতে জীব বৈচিত্রের হটস্পট হলো – আরাবল্লী পর্বতমালা/ পশ্চিমঘাট পর্বতমালা /পূর্বঘাট পর্বতমালা/ গাঙ্গেয় সমভূমি ।
উত্তর: পশ্চিমঘাট পর্বতমালা।
৪৪. বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির কারণ নয় -আবহাওয়ার পরিবর্তন/ বাসস্থান সংকোচন /খাদ্যের অভাব/ বনভূমির প্রসারণ।
উত্তর: বনভূমির প্রসারণ।
৪৫. একটি ভৌগলিক অঞ্চলে বিভিন্ন জীব সম্প্রদায়ের সামগ্রিক বৈচিত্র্যকে বলে- আলফা বৈচিত্র/ বিটা বৈচিত্র/ গামা বৈচিত্র /বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র।
উত্তর: বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র।
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন :
১. প্রকৃতির নাইট্রোজেনের উৎস কোথায় ?
উত্তর: নাইট্রোজেনের প্রধান উৎস হলো বায়ুর নাইট্রোজেন এবং মাটির নাইট্রেট লবন।
২. শিম্বি গোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে কোন ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে?
উত্তর: মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া রাইজোবিয়াম।
৩. বায়ুর নাইট্রোজেন বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে কিরূপে নেমে আসে ?
উত্তর: নাইট্রাস অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড রূপে।
৪. ক্লসট্রিডিয়াম কিরূপ জীব ?
উত্তর: মাটিতে বসবাসকারী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু।
৫. নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী একটি নীলাভ সবুজ শৈবাল এর উদাহরণ দাও ।
উত্তর: নস্টক।
৬. একটি নাইট্রোজেন ঘটিত সার এর উদাহরণ দাও ।
উত্তর: ইউরিয়া।
৭. কোন ব্যাকটেরিয়া অ্যামোনিফিকেশন এ সাহায্য করে ?
উত্তর: ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস।
৮. একটি নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।
উত্তর: নাইট্রোব্যাকটর।
৯. একটি ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।
উত্তর: সিউডোমোনাস।
১০. একটি গ্রিন হাউস গ্যাসের উদাহরণ দাও।
উত্তর: কার্বন ডাই অক্সাইড।
১১. SPM এর পুরো নাম কি ?
উত্তর: Suspended Particulate Matter.
১২. বায়ু দূষণের ফলে ফুসফুসের যে রোগ হয় তার একটি উদাহরণ দাও ।
উত্তর: হাঁপানি।
১৩. একটি কীটনাশকের উদাহরণ দাও।
উত্তর: DDT
১৪. একটি আগাছা নাশক এর উদাহরণ দাও ।
উত্তর: সিমাজিন
১৫. কত ডেসিবেল শব্দে মানুষ বধির হয়ে যায় ?
উত্তর: দীর্ঘদিন 100 ডেসিবেল শব্দের মধ্যে বাস করলে বধিরতা দেখা যায়।
১৬. অরণ্য ধ্বংসের একটি কারণ উল্লেখ করো ।
উত্তর: কল কারখানা নির্মাণ।
১৭. ভারতে কয়টি হটস্পট অঞ্চল আছে ?
উত্তর: চারটি।
১৮. সুন্দরবনের একটি আকর্ষণীয় উদ্ভিদের নাম কি ?
উত্তর: সুন্দরী।
১৯. সুন্দরবনের একটি সরীসৃপের উদাহরণ দাও।
উত্তর: গিরগিটি।
২০. টাইগার প্রজেক্ট কোথায় আছে ?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন।
২১. পশ্চিমবঙ্গের বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কোনটি ?
উত্তর: সুন্দরবন।
২২. পশ্চিমবঙ্গের অভয়ারণ্য কোনটি ?
উত্তর: বেথুয়াডহরি।
২৩. ক্রায়োসংরক্ষণের তাপমাত্রা কত ?
উত্তর: (-১৯৬°c)
২৪. রেড পান্ডা প্রজেক্ট কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর: সিকিম ও অরুণাচলে ।
২৫. কুমির প্রজেক্ট কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলে, উড়িষ্যার ভিতরকণিকা, টিকর্পারা, নন্দনকানন কুমির প্রকল্প হিসেবে বিখ্যাত ।
২৬. গন্ডার প্রকল্প কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের জলদাপাড়া এবং গরুমারা গন্ডার প্রকল্পের জন্য বিখ্যাত।
২৭. প্রকৃতির বৃক্ক বলা হয় কাকে ?
উত্তর: জলাভূমিকে।
২৮. লিও প্রজেক্ট কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর: গুজরাটের গির জাতীয় পার্কে।
২৯. ভারতবর্ষের একটি বিপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির নাম লেখ ।
উত্তর: সর্পগন্ধা ।
৩০. ভারতবর্ষের একটি বিপন্ন পাখির নাম লেখ ।
উত্তর: গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড।
৩১. ভারতবর্ষের একটি বিপন্ন সরীসৃপের নাম লেখ ।
উত্তর: হিমালয়ান সালামান্ডার।
৩২. ভারতবর্ষের একটি বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম লেখ ।
উত্তর: নীলগিরি হনুমান।
৩৩. একটি জল দূষণ ঘটিত রোগের নাম লেখ ।
উত্তর: হেপাটাইটিস।
৩৪. কোন গ্যাস মার্স গ্যাস নামে পরিচিত ?
উত্তর: মিথেন।
৩৫. ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ কে কি বলে ?
উত্তর: কারসিনোজেন।
৩৬. জলদাপাড়া অভয়ারণ্য কোন প্রাণী সংরক্ষণের জন্য বিখ্যাত ?
উত্তর: একশৃঙ্গ গন্ডার ।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন :
১. নাইট্রোজেন চক্র কাকে বলে ?
উত্তর: যে চক্রাকার পদ্ধতিতে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন প্রাকৃতিক উপায়ে ও জীবাণু দ্বারা আবদ্ধ হয়ে মাটিতে মেশে ও সেখান থেকে জীবদেহে প্রবেশ করে এবং জীবদেহ ও মাটি থেকে পুনরায় বায়ুমন্ডলে আবর্তিত হয় তাকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।
২. নাইট্রিফিকেশন কাকে বলে ?
উত্তর: যে পদ্ধতিতে জীবাণুর ক্রিয়ার ফলে মৃত্তিকাস্থ অ্যামোনিয়া প্রথমে নাইট্রাইট ও পরে নাইট্রেট যৌগে পরিনত হয় তাকে নাইট্রিফিকেশন বলে। নাইট্রি ফাইং ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ হল নাইট্রোসোমোনাস, নাইট্রোব্যাকটর ।
৩. ডিনাইট্রিফিকেশন কাকে বলে ?
উত্তর: মাটিতে বসবাসকারী কিছু জীবাণু মাটিতে আবদ্ধ নাইট্রোজেন যৌগ ভেঙে নাইট্রোজেন কে মুক্ত করে এবং বায়ুমন্ডলে ফিরিয়ে দেয় এই পদ্ধতিকে ডিনাইট্রিফিকেশন বলে। এই ধরনের জীবাণু প্রকৃত পক্ষে ক্ষতিকারক জীবাণু কারণ এরা মাটির উর্বরতা শক্তি কমিয়ে দেয়। এই ধরনের কয়েকটি ডিনাইট্রিফাইং জীবাণু হল থায়ো ব্যাসিলাস ডিনাইট্রিফিক্যানস , সিউডোমোনাস ইত্যাদি।
৪. দুটি স্বাধীনজীবি ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও যারা নাইট্রোজেন সংবন্ধন ঘটায়।
উত্তর: ক্লসট্রিডিয়াম , অ্যাজোটোব্যাকটর।
৫. পরিবেশ দূষণ কাকে বলে ?
উত্তর: বায়ু জল মাটি প্রভৃতির ভৌত-রাসায়নিক জৈবিক বৈশিষ্ট্যের যে অনভিপ্রেত ও পরিবর্তন মানবসভ্যতাকে ,যে কোন প্রজাতির জীবনকে ,কোন শিল্পের প্রক্রিয়াকে, কোন জীবের অস্তিত্ব কে ,এমন কি কোন সাংস্কৃতিক বা প্রাকৃতিক সম্পদকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তাকেই পরিবেশ দূষণ বলে।
৬. ইউট্রিফিকেশন কাকে বলে ?
উত্তর: জলাশয় ফসফেট জাতীয় সার, ডিটারর্জেন্ট ইত্যাদি মিশলে জলজ উদ্ভিদের বিশেষ করে শৈবালের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়। এই প্রক্রিয়াকে ইউট্রিফিকেশন বলে।
কারণ :
আবর্জনা শোধন কেন্দ্রের নির্গত অজৈব পরিপোষক জলাশয় মিশলে, মৃত্তিকা ক্ষয় জনিত কারনে কোন বস্তু জলে মিশলে বা জলাশয় আবর্জনা ফেলার ফলে অজৈব পরিপোষক এর মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ইউট্রিফিকেশন ঘটে।
৭. শৈবাল ব্লুম কাকে বলে ?
উত্তর: শৈবালের বৃদ্ধি ঘটে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে শৈবালের পচন ঘটে এবং জল দূষিত হয়, একে শৈবাল ব্লুম বলে ।
জলদূষণের ফলে জলজ প্রাণী যেমন মৃত্যু হয় তেমনি গবাদিপশুও ওই জল পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাদের মৃত্যু হতে পারে ।
৮. দুটি কৃষিক্ষেত্রে বর্জ্য পদার্থের উদাহরণ দাও ।
উত্তর: ডিডিটি, ফলিডল ।
৯. মাটি দূষণ ঘটায় এমন দুটি রাসায়নিক পদার্থের উদাহরণ দাও ।
উত্তর: অ্যামোনিয়া, ডিডিটি।
১০. কি কি রাসায়নিক বস্তু জল দূষণ ঘটায় ?
উত্তর: অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া ।
১১. অ্যাজমার কারণ ও লক্ষণ উল্লেখ করো ।
উত্তর: বায়ুতে মিশে থাকা ধুলো বালি, ছত্রাক ,ধোঁয়া ,পরাগরেণু ,ঝুল, ধূমপানের ধোঁয়া ইত্যাদি বায়ুদূষক মানবদেহে প্রবেশ করলে এক ধরনের শ্বাসকষ্ট হয় যাকে হাপানি বা অ্যাজমা বলে।
লক্ষণ :
এই রোগে রোগী হাঁপাতে থাকে, বুকের মধ্যে সাঁইসাঁই আওয়াজ হতে থাকে।
১২. ক্যান্সারের দুটি চিকিৎসা পদ্ধতি উল্লেখ করো ।
উত্তর: কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি।
১৩. ভারতীয় হটস্পট গুলির নাম কি কি ?
উত্তর: পূর্ব হিমালয় ,ইন্দো-বার্মা, পশ্চিমঘাট ও শ্রীলঙ্কা ,সুন্দাল্যান্ড।
১৪. জীব বৈচিত্র হ্রাসের দুটি কারণ উল্লেখ করো ।
উত্তর:
দূষণ : বায়ু জল দূষণ আজ বহু জীব বৈচিত্র কে অবলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ : বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ,যেমন – খরা বন্যা তুষারপাত ভূমিকম্প সুনামি সাইক্লোন দাবানল ইত্যাদির কারণে জীব বৈচিত্রের বিলুপ্তি ঘটেছে ।
১৫. ইন সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ?
উত্তর: প্রাকৃতিক বাসস্থান অর্থাৎ নিজস্ব পরিবেশে জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কে ইনসিটু সংরক্ষণ বলে। জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত বন, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, এর মাধ্যমে ইনসিটু সংরক্ষণ করা হয়।
১৬. এক্সসিটু সংরক্ষণ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর নিজস্ব প্রাকৃতিক আবাসস্থল এর বাইরে তাদের সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে ইনসিটু সংরক্ষণ বলে। যেমন- চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ক্রায়ো সংরক্ষণ ইত্যাদি।
১৭. অভয়ারণ্য কাকে বলে ?
উত্তর: যে সংরক্ষিত অঞ্চলে গাছপালার সঙ্গে বিশেষ কোন বন্য প্রজাতির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা আছে, তাকে অভয় অরণ্য বলে ।
বৈশিষ্ট্য :
i) বন্যপ্রাণী যারা অবলুপ্তির পথে তারা এখানে নির্ভয় ঘোরাফেরা করতে পারে ও প্রজননের লিপ্ত হতে পারে ।
ii) রাজ্য সরকারের নির্দেশে শিখার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ।
উদাহরণ : পশ্চিমবঙ্গের বেথুয়া ডহরি, কর্নাটকের বন্দিপুর ইত্যাদি।
১৮. জাতীয় উদ্যান এর উদাহরণ দাও ।
উত্তর: উত্তরাখণ্ডের কর্বেট, মধ্যপ্রদেশের কানহা এবং শিবপুরি।
১৯. বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কাকে বলে ?পশ্চিমবঙ্গের বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এর উদাহরণ দাও।
উত্তর: ইউনেস্কোর ম্যান এন্ড বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কর্মসূচির অন্তর্গত যে স্থলজ অঞ্চলে গোটা বাস্তুতন্ত্র এবং তার সম্পূর্ণ জীব-বৈচিত্র রক্ষিত হয়, তাকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ বলে ।
পশ্চিমবঙ্গের বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হলো সুন্দরবন।
২০. JFM এবং PBR এর সম্পূর্ণ নাম কি ?
উত্তর: JFM =Joint Forest Management .
PBR =People’s Biodiversity Register.
২১. দুটি বিপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির উদাহরণ দাও ।
উত্তর: সর্পগন্ধা, সূর্যশিশির।
২২. দুটি বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির উদাহরণ দাও ।
উত্তর: ভারতীয় বাঘ, ঈগল।
২৩. পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় টাইগার প্রজেক্ট আছে ?
উত্তর: সুন্দরবন, বক্সা।
২৪. ভারতের একটি প্রসিদ্ধ কুমির প্রকল্প ও রেড পান্ডা প্রকল্পের স্থান উল্লেখ করো।
উত্তর: কুমির প্রকল্প : পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের লোথিয়ান দ্বীপ ।
রেড পান্ডা প্রকল্প : সিকিম ও অরুণাচল ।
২৫. বিশ্ব পরিবেশ দিবস কবে পালন হয় ও বিশ্ব ওজোন দিবস কবে পালন হয় ?
উত্তর: 5 ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। 16 সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব ওজোন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
২৬. অ্যাসিড বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় লেখ ।
উত্তর:
i) প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো।
ii) বিকল্প শক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে কম করা।
২৭. জলে কেন দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় ?
উত্তর: জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে জৈব দূষক পদার্থ গুলি অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয় এর ফলে মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইট, ফসফিন উপাদান সৃষ্টি হয়। ফলে জলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
২৮. গ্রিন মাফলার কি এবং পরিবেশ দূষণ রোধের জন্য 3R নীতি কি ?
উত্তর: শব্দ দূষণ রোধ করার জন্য রাস্তার দু’ধারে 3-4 লাইন গুল্ম ও বৃক্ষ জাতীয় গাছ লাগানোর গ্রিন মাফলার বলে।
পরিবেশ দূষণ রোধে 3R নীতি হলো – Reduce, Recycle and Reuse.
২৯. গ্রিন গ্রিন হাউস গ্যাস গুলি কি কি ?
উত্তর: কার্বন ডাই অক্সাইড ,মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, জলীয়বাষ্প অন্যান্য কিছু গ্যাস যেমন কার্বন মনোঅক্সাইড অ্যামোনিয়া ।
৩০. বায়ু দূষণের দুটি ক্ষতিকারক প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর:
i) বায়ু দূষণ পরিবেশের বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন অ্যাসিড বৃষ্টির মতো ঘটনা ঘটে ।
ii) বায়ু দূষণের ফলে মানব দেহের বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ দেখা যায়।
৩১. সুন্দরবনের দুটি পরিবেশ জনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করো ।
উত্তর:
i) মিষ্টি জলের সংকট ও নগরায়ন।
ii) খাদ্য ও খাদকের ভারসাম্য নষ্ট ও পানীয় জলের অভাব।
৩২. ভারতের কোথায় কবে প্রথম বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ স্থাপিত হয় ?
উত্তর: ভারতে প্রথম হাজার 1986 খ্রিস্টাব্দে নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ স্থাপিত হয়।
৩৩. ভারতবর্ষে ব্যাঘ্র সংরক্ষিত হয় এমন দুটি অরণ্যের নাম লেখ।
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এবং উত্তরপ্রদেশের করবেট জাতীয় উদ্যান।
৩৪. অপারেশন রাইনো কি ?
উত্তর: উনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে দেখা যায় যে গন্ডারের সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে কমে গেছে। ভারতে আসামের কাজিরাঙ্গা হলো গন্ডারের প্রাচুর্য কেন্দ্র ।কিন্তু সেখানেও গন্ডারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গন্ডার সংরক্ষণের জন্য অপারেশন রাইনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে গন্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
৩৫. সুরক্ষিত অঞ্চলের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।
উত্তর:
i) এই অঞ্চলটি বন বা বনাঞ্চল না হলেও রাজ্য সরকার আইনের দ্বারা বিপদগ্রস্ত প্রাণী সংরক্ষণ করতে পারে।
ii) এই অঞ্চলের সারাদিন সারারাত ব্যাপী পাহারার ব্যবস্থা থাকে।
৩৬. পশ্চিমবঙ্গের দুটি জাতীয় উদ্যান এবং দুটি অভয়ারণ্যের নাম লেখ ।
উত্তর:
জাতীয় উদ্যান : গরুমারা, জলদাপাড়া ।
অভয়ারণ্য : চাপড়ামারি, বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য।
৩৭. মেগাডাইভারসিটির দেশ কাকে বলা হয় ?
উত্তর: সারাবিশ্বে জীব বৈচিত্রের ঘটছে দেখা যায় যে বিষুবরেখার উভয় পাশে উষ্ণ ও আর্দ্র স্থানগুলিতে উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যায় তাই এই অঞ্চলের দেশগুলোকে একত্রে মেগাডাইভারসিটি দেশ বলা হয়।
৩৮. জীব বৈচিত্রের উপর বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর:
i) বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মৃত্তিকা ক্রমাগত শুষ্কতার রূপ ধারণ করবে। ফলে গ্রীষ্মকালে গরমের মাত্রা অধিক হবে, বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা হবে।
ii) সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানগুলি জলের তলায় তলিয়ে যাবে এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে।
৩৯. হটস্পট কাকে বলে? পৃথিবীতে টোটাল কয়টি হটস্পট আছে ?
উত্তর: পৃথিবীর যে সমস্ত অঞ্চলে অধিক সংখ্যায় উদ্ভিদ ও প্রাণী বিশেষ করে আঞ্চলিক প্রজাতির বাস করে এবং তাদের অস্তিত্ব বর্তমানে বিপন্ন হতে চলেছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংরক্ষণের জন্য সেই সকল অঞ্চলকে হটস্পট বলা হয়।
সমগ্র পৃথিবীতে 34 টি স্থলজ এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে । এর মধ্যে ভারতবর্ষে চারটি হটস্পট রয়েছে, সেগুলি হল- পূর্ব হিমালয়, ইন্দো-বার্মা, পশ্চিমঘাট ও শ্রীলঙ্কা, সুন্দাল্যান্ড।
৪০. কে কত খ্রিস্টাব্দে জীব বৈচিত্র শব্দটি প্রবর্তন করেন এন্ড এবং কে সর্বপ্রথম জীব বৈচিত্র কে ব্যাখ্যা করেন ?
উত্তর: বিজ্ঞানী ওয়াল্টার রোসেন হাজার 1985 খ্রিস্টাব্দে জীব বৈচিত্র শব্দটি প্রবর্তন করেন।
বিজ্ঞানী নর্স ও ম্যাকমানুস 1980 খ্রিস্টাব্দে সর্বো প্রথম জীব বৈচিত্র কে ব্যাখ্যা করেন।
দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন :
১. প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন সংবন্ধন এবং জৈবিক নাইট্রোজেন সংবন্ধন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: (A) প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন সংবন্ধন :
সাধারণত বজ্রপাতের সময় যখন আকাশে বিদ্যুৎস্ফুরণ ঘটে, বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন তখন অক্সিজেন এর সঙ্গে যুক্ত হয় নাইট্রিক অক্সাইড উৎপন্ন করে।
N2+O2 —> 2NO
এই নাইট্রিক অক্সাইড আবার বায়ুর অক্সিজেন এর সংস্পর্শে এসে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড তৈরি করে।
2NO + O2 —> 2NO2
এই নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড জলীয়বাষ্প বা বৃষ্টির জলের সঙ্গে বিক্রিয়ায় নাইট্রাস অ্যাসিড এবং নাইট্রিক এসিডে পরিণত হয় এবং মাটিতে নেমে আসে।
2NO2 + H2O —> HNO2 + HNO3
এই দুই প্রকার অ্যাসিড মাটির বিভিন্ন খনিজ লবণ এর সঙ্গে বিক্রিয়ায় নাইট্রেট যৌগ গঠন করে এবং মাটিতে নাইট্রোজেন এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
(B) জীবজ নাইট্রোজেন সংবন্ধন :
যে পদ্ধতিতে প্রকৃতির মুক্ত নাইট্রোজেন জীবাণু বা নীলাভ সবুজ শৈবালের ক্রিয়ার ফলে অ্যামোনিয়া রূপে আবদ্ধ হয় তাকে জীবজ নাইট্রোজেনের সংবন্ধন বলা হয়। এটি মাটিতে দুটি উপায়ে ঘটে থাকে । যথা –
i) স্বাধীনজীবী জীবের দ্বারা : মাটিতে বসবাসকারী কিছু নাইট্রোজেন স্থিতিকারী জীবাণু যথা ক্লসট্রিডিয়াম, অ্যাজোটোব্যাকটর প্রভৃতি এবং অ্যানাবিনা , নষ্টক প্রভৃতি নীলাভ সবুজ শৈবাল বায়ু থেকে সরাসরি মুক্ত নাইট্রোজেন কে তাদের দেহকোষে অ্যামোনিয়া রূপে আবদ্ধ করে। এইসব অনুজীবের মৃত্যুর পর সেগুলি মাটিতে সঞ্চিত হয়। এই পদ্ধতিতে বছরে একর প্রতি 10 থেকে 20 কেজি নাইট্রোজেন স্থিতিকরন হয়।
ii) মিথোজীবী জীবের দ্বারা :
বিভিন্ন প্রজাতির রাইজোবিয়াম নামক মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া শিম্বি গোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে উৎপন্ন অর্বুদ বা গুটিতে আশ্রয় নেয় এবং তাদের উৎপন্ন শর্করাকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। বিনিময়ে তারা বায়ুমণ্ডল থেকে মুক্ত নাইট্রোজেনকে অ্যামোনিয়া রূপে আবদ্ধ করে এবং ওই আশ্রয়দাতা উদ্ভিদকে পুষ্টির জন্য সরবরাহ করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেবল শিম্বি গোত্রীয় উদ্ভিদ দেহে “লেগ হিমোগ্লোবিন” নামক এক প্রকার প্রাণীদের হিমোগ্লোবিন সদৃশ জৈব যৌগ থাকায় কেবল ওই গোত্রের উদ্ভিদের মূলেই রাইজোবিয়াম বাসা বাঁধে।
২. বায়ুদূষণ ও জলদূষণের দুটি কারণ ও দুটি ফলাফল উল্লেখ করো।
উত্তর:
(A) বায়ুদূষণ এর কারণ :
i. গ্রীনহাউস গ্যাস – নাইট্রাস অক্সাইড ,কার্বন মনো অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ও ক্লরোফ্লুরো কার্বন ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ু দূষণ ঘটায়।
ii. SPM – এটি ধোঁয়া-ধুলো বা এরোসল হতে পারে। যানবাহন বা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গত ধোয়ার মধ্যে যে কার্বন কণা থাকে তার আকার 10 মাইক্রোমিটার থেকে কম হয়। এগুলি বাতাসের মধ্যে সূক্ষ্মভাবে ভেসে থাকে এবং বাতাসের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে। SPM বায়ু দূষণের একটি বিশেষ কারণ।
ফলাফল :
i) মৃত্তিকার উপর প্রভাব – অ্যাসিড বৃষ্টি মৃত্তিকায় প্রভূত ক্ষতিসাধন করে। কিছু অনুজীব মৃত্তিকায় pH এর পরিবর্তন সহ্য করতে না পেরে মরে যায়। অ্যাসিডের প্রভাবে অনুজীবদের উৎসেচক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
ii) ফুসফুসের রোগ – বায়ু দূষণের ফলে হাঁপানি, এমফাইসিমা, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যালার্জি প্রভৃতি রোগ হয়।
(B) জলদূষণের কারণ :
i) কৃষি ক্ষেত্রের বর্জ্য – কৃষিক্ষেত্রে ফসল উৎপাদনের জন্য নানারকম রাসায়নিক সার এবং কীট পতঙ্গ ধ্বংস করার জন্য কীটনাশক স্প্রে করা হয়। কৃষি ক্ষেত্র থেকে এসব সার ও কীটনাশক জলধৌত হয়ে পুকুরের জলে এসে পড়ে এবং জল দূষিত করে।
ii) জীবাণু – পুকুর, নদী ইত্যাদির পারে মলমূত্র ত্যাগ করা ,মরা পশুপাখির দেহ ফেলা, সঞ্চিত বর্জ্য ইত্যাদি চলে মিশে যায়। এইসব বর্জ্যে প্রচুর ক্ষতিকারক জীবাণু থাকে যা জলে মিশে জলকে দূষিত করে ।
ফলাফল :
i) রোগ – দূষিত জল পান করলে নানান রকম জলবাহিত রোগ বিশেষ করে কলেরা ,টাইফয়েড, আমাশয় ,উদারাময় ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়।
ii) ইউট্রিফিকেশন – জলাশয়ে ফসফেট জাতীয় সার , ডিটার জেন্ট ইত্যাদি মিশলে জলজ উদ্ভিদের বিশেষ করে শৈবাল এর ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে ।ফলে জলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়। এই প্রক্রিয়াকে ইউট্রিফিকেশন বলে।
৩. মাটি দূষণ ও শব্দ দূষণের দুটি কারণ ও দুটি ফলাফল উল্লেখ করো ।
উত্তর: (A) মাটি দূষণ এর কারণ :
i) জীবাণু – বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকারক জীবাণু যেমন- ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া, অন্যান্য পরজীবী প্রাণী মাটি দূষণ ঘটায়।
ii) রাসায়নিক পদার্থ – কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার কীটনাশক আগাছানাশক মাটিকে দূষিত করে।
মাটি দূষণের ফলাফল :
i) রোগ – সরাসরি মাটির সঙ্গে স্পর্শ কিংবা প্রশ্বাসের মাধ্যমে মাটির ক্ষতিকর জীবাণু ও পরজীবী মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং নানা রকম রোগ সৃষ্টি করে। মাটিতে মিশে থাকা মলমূত্রের সংস্পর্শে গোলকৃমি, ফিতাকৃমির ডিম শরীরে প্রবেশ করলে মানুষ এই পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়।
ii) জীব বিবর্ধন – খাদ্য শৃংখল এর মাধ্যমে এক পুষ্টি স্তর থেকে পরবর্তী পুষ্টি স্তর এর দূষক পদার্থের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ে। কৃষি জমিতে যে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তা বৃষ্টির জলে কোন জলাশয় মিশলে সেখানে থাকা শৈবাল ওই কীটনাশক শোষণ করে। কোন ছোট মাছ যদি ঐরকম অনেকগুলো শৈবালকে খায় তখন সে মাছের দেহে বর্ধিত মাত্রায় ওই কীটনাশক প্রবেশ করে। এরপর পরবর্তী প্রতিটি স্তরে থাকা বড় মাছ অনেকগুলো ছোট মাছকে খেলে আরও বেশি পরিমাণ কীটনাশক তার শরীরে সঞ্চিত হয়। ঐরকম বেশ কয়েকটি বড়ো মাছ যদি কোন মানুষ খায় তাহলে মানুষের শরীরে বিপদজনক পরিমাণে কীটনাশক প্রবেশ করবে।
(B) শব্দ দূষণ এর কারণ :
i) যানবাহন – শহরে বাস রাস্তার ধারে যাদের বাড়ি তাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহনের বিকট শব্দে জেরবার হতে হয়। এয়ারপোর্ট কিংবা রেললাইনের ধারে বাড়ি হলে শব্দ দূষণের নাস্তানাবুদ হতে হয়। পেশাগতভাবে যারা বাস বা লরি চালায় তারাও শব্দ দূষণের শিকার হয়।
ii) শিল্প – কলকারখানার সংলগ্ন স্থানে যাদের বাস তারা বিভিন্ন যন্ত্রের শব্দে প্রভাবিত হন। এছাড়াও যারা কলকারখানায় কাজ করেন কিছুদিন পরেই তারা কানে কম শোনে এবং আংশিক বধির হয়ে পড়েন।
শব্দ দূষণের ফলাফল :
i) মানুষের উপর প্রভাব – কানে কম শোনা ,বধিরতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। যাদের হার্ট দুর্বল তাদের শব্দ দূষণের মারাত্মক ক্ষতি হয় রক্তচাপ বাড়ে।
ii) প্রাণীর ওপরে প্রভাব – শব্দ দূষণ প্রাণীদের জীবনযাত্রার ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। আচরণগত পরিবর্তন ঘটায়, স্বাভাবিক যৌন বংশবিস্তারে ব্যাঘাত ঘটায়, আংশিক বা সম্পূর্ণ বধিরতা সৃষ্টি করে। পরিযায়ী পাখিরা শব্দ দূষণের জন্য অনেক সময় দিক ভুল করে।
৪. ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে কি ধরনের সমস্যা দেখা যায় ? কয়েকটি সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়, এরকম কিছু সমস্যা হলো –
i) প্রাকৃতিক সম্পদের অতি ব্যবহার এবং হ্রাস : বেশিরভাগ প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন – বনজ সম্পদ, জলজসম্পদ, খোলা মাঠ, পশুচারণভূমি, কৃষি ক্ষেত্র ইত্যাদি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। জনবসতি বেড়ে যাওয়ার ফলে বন কেটে সেখানে শিল্প স্থাপন করা হচ্ছে ,কৃষি জমিতে আবাসস্থল গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন জলজ সম্পদ যেমন মাছ, কাকড়া ,মুক্তা, ঝিনুক অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে। পশুচারণভূমি গৃহ নির্মাণের কাজে লাগানো হচ্ছে।
ii) অরণ্য ধ্বংস এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষয় : জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসস্থানের চাহিদা বাড়ে। বাসস্থান, কলকারখানা ইত্যাদি নির্মাণের জন্য অরণ্য ধ্বংস করা হয় ।এর ফলে বিনষ্ট হয় সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য, পরিবর্তিত হয় জলবায়ু , ক্ষয় হয় বাস্তু তন্ত্রের ।
iii) কৃষি জমির হ্রাস : জনসংখ্যা বাড়লে নতুন শহর গড়ে ওঠে। এর জন্য কৃষি জমি ধ্বংস করে তৈরি হয় নতুন বাড়িঘর, রাস্তাঘাট। ফলে টান পড়ে খাদ্যের যোগানে।
iv) মিষ্টি জলের অভাব : জনসংখ্যা বাড়লে পানীয় জলের টান পড়ে। মিষ্টি জলের ভাণ্ডার সীমিত হওয়ায় লোক সংখ্যা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই জলকষ্ট দেখা দেয়।
v) বায়ু ও জল দূষণ : লোক সংখ্যা বাড়লে যানবাহন বাড়বে বাড়বে কল-কারখানা- সেইসঙ্গে বাড়বে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। ফলে বায়ু দূষণ বাড়বে, জলের ব্যবহার বাড়বে ,বাড়বে অপব্যবহারও। গৃহস্থালি ও কল কারখানার বর্জ্য জল মিশে জলকে দূষিত করে তুলবে। সেইসঙ্গে বাড়বে জলবাহিত বিভিন্ন রোগ।
vi) বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন : জনসংখ্যা বাড়লে যানবাহন এবং কল কারখানার সংখ্যা বাড়ে। সেই হারে বাড়ে বায়ু দূষক পদার্থের পরিমাণ। বায়ুদূষক গ্রীন হাউস গ্যাস গুলি বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায়।দূষণ, অরণ্য ধ্বংস ইত্যাদি কারণে বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ঘটে। ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ বাড়ে।
vii) জলাভূমি ধ্বংস : লোক সংখ্যা বাড়ার কারণে জায়গা জমির অভাব দেখা দেয় বিভিন্ন জলাভূমি বেআইনি ভাবে বুজিয়ে সেখানে তৈরি হয় বহুতল বাড়ির শপিংমল ইত্যাদি ।এখন জলাভূমিকে বলা হয় প্রাকৃতিক বৃক্ক বায়ুদূষণ রোধে সাহায্য করে। তাই জলাভূমি ধ্বংস হলে বায়ুদূষণ বাড়ে।
৫. পরিবেশ দূষিত হলে মানব স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে তা কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে আলোচনা করো।
উত্তর: পরিবেশগত কারণে অনেক রোগ বা উপসর্গ দেখা দেয়। এখানে এমনই দু-একটি রোগের সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো –
a.অ্যাজমা : এটি এমন এক অবস্থা সৃষ্টি করে যেখানে শ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে ,দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়, কাশি এবং শো শো শব্দ হয়, বুকে চাপ এর অনুভূতি হয় , কাশির সঙ্গে শ্লেষ্মা বের হয়।অ্যাজমা নানান কারণে হতে পারে ।এর মধ্যে পরিবেশগত কারণ গুলি হল প্রাণীর মল, উদ্ভিদের পরাগ রেণু ও ছত্রাক। মানুষের সৃষ্ট কারণ হলো বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু। এগুলি সাধারণত প্রশ্বাসের সময় নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাস নালীতে প্রবেশ করে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
b. ব্রংকাইটিস : এটি হলো ফুসফুসের বায়ু চলাচলের পথে প্রদাহ। এই রোগে খুব কাশি হয়, কফের সঙ্গে ঘন শ্লেষ্মা বের হয়, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, জ্বর হতে পারে। কিছু রাসায়নিক বা ধোঁয়া শ্বাসবায়ু সঙ্গে মিশে শরীরে প্রবেশ করলে এই রোগ হতে পারে। ঝালাই কর্মী, দমককর্মী, ধূমপায়ীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
c.ক্যান্সার : কীটনাশক আগাছানাশক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে ।যারা ধূমপান করে তাদের ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যারা তামাক চিবায় তাদের মুখের ক্যান্সার হতে পারে
৬. জীব বৈচিত্র কাকে বলে ? জীব বৈচিত্র তিনটি গুরুত্ব আলোচনা করো ।
উত্তর: বিভিন্ন প্রকার বাস্তুতন্ত্রের অথবা পরিবেশে কিংবা বাসস্থানে জীবের মধ্যে যেসব বিভিন্নতা দেখা যায়, তাকে এককথায় জীব-বৈচিত্র বলে।
জীব বৈচিত্রের তিনটি গুরুত্ব হলো –
a. খাদ্য উৎপাদন : খাদ্যের উৎস হিসেবে সবুজ উদ্ভিদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সবুজ উদ্ভিদরা খাদ্য সংশ্লেষ করে তাদের বিভিন্ন অঙ্গে সঞ্চিত রাখে। সেই খাদ্য মানুষ সহ সমস্ত প্রাণীই ভক্ষণ করে। কৃষি ক্ষেত্রে নানান রকম ফসল, যেমন -ধান ,গম ,ভুট্টা ,ডাল জাতীয় শস্য বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ করা হয় ।যা থেকে আমরা উদ্ভিজ্জ খাদ্য পেয়ে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন প্রাণীজ খাদ্য, যেমন- দুধ ,ডিম, মাংস ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাণী দের কাছ থেকে পেয়ে থাকি।
b. বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় : বাস্তুতন্ত্রে জীব সম্প্রদায় পরস্পর নির্ভরশীল হয়ে বসবাস করে। কোন একটি উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির বিলুপ্তি হওয়ার অর্থ হল- খাদ্যশৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটা এবং বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়া। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য খাদ্য শৃংখল কে সঠিক রাখা, বায়ুর উপাদান গুলি কে সঠিক রাখা, উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণ ইত্যাদির উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
c. অর্থনৈতিক গুরুত্ব : জীব বৈচিত্র একটি দেশের মূল্যবান সম্পদ ও সমৃদ্ধির পরিচায়ক। বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। জীব বৈচিত্র কে কাজে লাগিয়ে গৃহ সামগ্রী এবং আসবাব ,কাগজ শিল্পে , আঠা,রজন , মোম,সিল্ক,মধু,উল, মুক্তো ইত্যাদি সংগ্রহ করে অর্থনৈতিক সুরক্ষা হয়।
৭. জীব বৈচিত্র হ্রাসের পাঁচটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর:
i) বাসস্থান ধ্বংস : বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাওয়াটা প্রকৃতি থেকে জীবদের হারিয়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ। কাঠের সৌখিন আসবাবপত্র ও অন্যান্য ভোগবিলাসী সামগ্রী তৈরির প্রয়োজনে কিংবা বাড়িঘর কল কারখানা নির্মাণের জন্য গাছ কেটে ফেলা হয়। ফলে ধ্বংস হয় অনেক উদ্ভিদ এবং প্রাণী। অরণ্য ধ্বংস করে চা কফি চাষের প্রবর্তনের ফলে অনেক বায়োডাইভারসিটি হটস্পটের জীব বৈচিত্রের বিনাশ ঘটেছে।
ii) শিকার এবং চোরাশিকার : মানুষ অর্থের লোভে বা নিছক শিকারের আনন্দে পশুপাখি শিকার করে। এর ফলে আজ অনেক বন্যপ্রাণী অবলুপ্তির মুখে তাছাড়া বিভিন্ন চোরাশিকারির বিভিন্ন প্রাণীর চামড়া, লোম,শিং প্রভৃতি বিদেশে রপ্তানি করার জন্য চোরাশিকারে লিপ্ত হচ্ছে। বেআইনিভাবে বহু প্রাণী নিধনের ফলে ঐ সকল প্রাণীরা বিলুপ্তির পথে এসে দাঁড়িয়েছে।
iii) দূষণ : বায়ু ও জলদূষণ আজ বহু জীব বৈচিত্র কে অবলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে।
iv) অতি ব্যবহার : প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার ,যেমন- বৃক্ষচ্ছেদন, পশু পাখি নিধন, মৃত্তিকা কর্শন, অতিরিক্ত জল সম্পদের ব্যবহার ইত্যাদির কারণে জীব-বৈচিত্র হ্রাস পাচ্ছে।
v) প্রাকৃতিক দুর্যোগ : বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- খরা, বন্যা ,তুষারপাত, ভূমিকম্প, সুনামি ,সাইক্লোন, দাবানল ইত্যাদি কারণে জীব বৈচিত্রের বিলুপ্তি ঘটছে।
৮. সুন্দরবনের পরিবেশগত সমস্যা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: আজকাল সুন্দরবন অঞ্চলে নানান রকম পরিবেশগত অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে।এরকম কয়েকটি সমস্যা হল –
i) নগরায়নের জন্য লবণাম্বু উদ্ভিদ ধ্বংস করা : লবণাম্বু উদ্ভিদ সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমুদ্রের ঢেউ বন্যা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। নগরায়নের জন্য লবণাম্বু উদ্ভিদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
ii) কৃষি : জনবসতি গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কৃষির প্রসার ঘটছে। এর ফলে একদিকে যেমন বাদাবন তার নিজস্বতা হারাচ্ছে, নির্দিষ্ট ফসলের চাষ আবাদের জন্য বিনষ্ট হচ্ছে জীব বৈচিত্র।
iii) মিষ্টি জলের সংকট : বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সমুদ্র এবং নদী খাড়ি, ভেরি ইত্যাদিতে কেবল নোনাজল। এখানে পর্যাপ্ত নলকূপ এবং মিষ্টি জলের জলাশয়ের অভাব। বন্যার ফলে মিষ্টি জলের জলাশয় গুলিতে নোনা জল প্রবেশ করে।
iv) বাসস্থান ধ্বংস : সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে নিম্নচাপ এর ফলে প্রবল ঝড় বন্যা দেখা দেয়। এতে সুন্দরবন বিভিন্ন উদ্ভিদ ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে প্রাণীদের বাসস্থান নষ্ট হয়।
v) দূষণ : সুন্দরবন এলাকায় বায়ু দূষণ ও জল দূষণের জন্য পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে ওই এলাকার উদ্ভিদ ও প্রাণী দের ক্ষতি হচ্ছে । সমুদ্রের জলে রাসায়নিক পদার্থ এবং খনিজ তেল মিশে জল দূষণ ঘটে এবং অরণ্য ধ্বংসের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে বায়ু দূষণ ঘটে।
৯. ইন সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ? এ দুটি স্থানের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ আলোচনা করো ।
উত্তর: জীবকে তার নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে রেখে সংরক্ষণ করা হলে তাকে ইনসিটু সংরক্ষণ বলে।
a) জাতীয় উদ্যান : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় যেসব স্থানে সমস্ত রকম গাছপালা ও বন্য জীবজন্তুরা নিজস্ব পরিবেশে জাতীয় সংবিধান প্রণীত আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত হয়, তাদের জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক বলে ।
বৈশিষ্ট্য – i) এটি ভারত সরকারের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
ii) শিকার সম্পূর্ণ নিষেধ। আগ্নেয়াস্ত্রসহ শিকারি প্রবেশ নিষেধ । তবে পর্যটক ভিতরে যেতে পারে ।
উদাহরণ – পশ্চিমবঙ্গের গরুমারা জাতীয় উদ্যান, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, উত্তরাখণ্ডের করবেট, মধ্যপ্রদেশের কানহা এবং শিবপুরি।
b. অভয়ারণ্য : যে সংরক্ষিত অঞ্চলে গাছপালার সঙ্গে বিশেষ কোন বন্য প্রজাতি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা আছে তাকে অভয়ারণ্য বলে।
বৈশিষ্ট্য – i)বন্যপ্রাণী যারা অবলুপ্তির পথে তারা এখানে নির্ভয় ঘোরাফেরা করতে পারে ও প্রজননের লিপ্ত হতে পারে ।
ii) রাজ্য সরকারের নির্দেশে শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
উদাহরণ – পশ্চিমবঙ্গের বেথুয়া ডহরি, কর্নাটকের বন্দিপুর।
১০. এক্স সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে? এর তিনটি স্থান বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর নিজস্ব প্রাকৃতিক আবাসস্থল এর বাইরেও তাদের সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে এক্স সিটু সংরক্ষণ বলে ।
যেমন- চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ক্রায়ো সংরক্ষণ ।
চিড়িয়াখানা : পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরের চিড়িয়াখানা, দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান চিড়িয়াখানা,দিল্লির চিড়িয়াখানা উল্লেখযোগ্য চিড়িয়াখানা।
বৈশিষ্ট্য – i) চিড়িয়াখানায় দেশ-বিদেশে প্রাণী প্রজাতি সংরক্ষিত হয়।
ii) প্রাণীরা এখানে স্বাধীনভাবে থাকতে পারেনা, শিকার করতে পারে না। এদের মধ্যে আলাদা ভাবে সংরক্ষন করা হয়।
iii) স্বল্প কিছু প্রাণীর প্রজনন এর ব্যবস্থা রয়েছে ।
বোটানিক্যাল গার্ডেন : পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া শিবপুর এর ইন্ডিয়ান বোটানিক্যাল গার্ডেন বিখ্যাত। এছাড়া দার্জিলিংয়ের লয়্যাড বোটানিক্যাল গার্ডেনও প্রসিদ্ধ।
বৈশিষ্ট্য : i) দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষিত হয়।
ii) উদ্ভিদ গুলি স্বাধীন ভাবে বেড়ে উঠেছে, বংশবিস্তার করতে পারে। তবে এদের পরিচর্যা করার ব্যবস্থা আছে।
ক্রায়ো সংরক্ষণ : যে পদ্ধতিতে সমগ্র কোষ বা কলা কে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য জিরো ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এর নিচে সংরক্ষণ করা হয় তাকে ক্রায়ো সংরক্ষণ বলে।
বৈশিষ্ট্য –
i) উদ্ভিদ নমুনা গুলিকে বিশেষ প্রকৌশলী -190 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে সংরক্ষণ করা হয়।
ii) পুরো সংগ্রহশালা –136 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে রাখা হয়। নমুনাগুলো কে বিশেষ কাঁচপাত্রে কাচের আলমারি তে সংরক্ষণ করে রাখা থাকে।
iii)জার্ম প্লাজম বহুদিন ধরে সংরক্ষিত রাখা হয় ।
১১. জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ এর JFM ও PBR এর ভূমিকা লেখ ।
উত্তর: JFM (Joint Forest Management) : এটি ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা। এর অধীনে প্রথম প্রকল্পটি শুরু হয় 1971 খ্রিস্টাব্দে। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আরাবারি অরণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া শাল গাছের জঙ্গল পুনরুদ্ধারের জন্য। পুনরুদ্ধারের দায়িত্বে ছিলেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। এই প্রকল্পটির সূচনা করা হয়েছিল জনগণের দাবি মেনে ধ্বংসের হাত থেকে অরণ্যকে বাঁচাতে। এই প্রকল্পে সাধারন মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অরণ্যের সুরক্ষা আর ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল ।
পরবর্তীকালে 1977 সালে গুজরাটের ভূক্ষয়রোধে এই সংস্থার উদ্যোগে সেখানকার বাসিন্দাদের সহযোগিতায় একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয় এবং ব্যাপক সাফল্য আসে। 2005 সালে এই সংস্থা ভারতের 27 টি রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে, যার এখনো কাজ চলছে।
PBR (People’s Biodiversity Register ) : এটি স্থানীয় মানুষের সাহায্যে গড়ে তোলা একটি প্রামাণ্য নথি । যেখানে স্থানীয় সম্পদ এর সম্বন্ধে জ্ঞান এবং তাদের প্রাপ্তিসাধ্য তাদের ব্যবহার এবং তাদের সম্বন্ধে ঐতিহ্যবাহী পরম্পরাগত সংক্রান্ত তথ্য থাকে। ভারত সরকারের ন্যাশনাল বায়োডাইভারসিটি অথরিটির প্রকাশিত 2485 টি PBR এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে 76 টি।