পাঠ পরিকল্পনা:
বাংলার শিক্ষা ক্ষেত্রে বিকল্প চিন্তা ভাবনার সংসার এবং সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ ; বাংলা ছাপাখানার বিকাশ- ছাপা পুস্তকের সঙ্গে শিক্ষা বিস্তারের সম্বন্ধ – ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগ ; উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও ইউ এন রায় এন্ড সন্স – বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ – বসু বিজ্ঞান মন্দির – জাতীয় শিক্ষা পরিষদ, উপনিবেশিক শিক্ষা ধারণের সমালোচনা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং শান্তিনিকেতন – প্রকৃতি , মানুষ , শিক্ষা ।
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
১. বাংলা ছাপাখানার বিকাশ কে ভাগ করা হয় – দুটি পর্যায়ে / তিনটি পর্যায়ে / চারটি পর্যায়ে / পাঁচটি পর্যায়ে।
উত্তর : চারটি পর্যায়ে ।
২. ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার ছাপাখানার বিকাশে যুগকে বলা হয় – প্রস্তুতি যুগ/ আদিযুগ / মধ্যযুগ / আধুনিক যুগ ।
উত্তর : আদিযুগ ।
৩. ছাপাখানার বিকাশে আদিযুগ কে ভাগ করা হয় – দুটি ভাগে / তিনটি ভাগে / চারটি ভাগে /পাঁচটি ভাগে ।
উত্তর : তিনটি ভাগে ।
৪. ভারতবর্ষে মুদ্রণ যন্ত্রের প্রচলন করেছিলেন – ইংরেজরা / ফরাসিরা / পর্তুগিজরা ।
উত্তর : পর্তুগিজরা ।
৫. ‘ A Code of Gentoo Laws ‘ বইটি প্রকাশিত হয় – ১৭৭৬/১৭৫৪/১৭৭৮/১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে ।
৬. হালহেডের বাংলা ব্যাকরণ ছাপা হয় – ১৭৭৬/১৭৬৭/১৭৭৮/১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ।
৭. ক্যালকাটা গেজেট প্রেস স্থাপিত হয় – ১৭৮৩/১৭৭৮/১৭৭৬/১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
৮. শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা হয় – ১৮০১/১৭৭৮/১৮০০/১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ।
৯. বিশোপস কলেজে প্রথম মুদ্রণ যন্ত্র বসে – ১৮৩৩/১৮২০/১৮২৩/১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ।
১০. অ্যান্ড্রুজ এর ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৭৭৮/১৭৮৮/১৭৬৫/১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ।
১১. ‘ বেদান্তচন্দ্রিকা ‘ বইটি লিখেছেন – রামরাম বসু / মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার / চণ্ডীচরণ মুনশী /বিদ্যাসাগর।
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ।
১২. ‘ তোতা ইতিহাস ‘ বইটি লিখেছেন – রামরাম বসু / মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার / চণ্ডীচরণ মুনশী / ভারতচন্দ্র।
উত্তর : চণ্ডীচরণ মুনশী ।
১৩. ‘ স্কুল বুক সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮১৭/১৮২৭/১৮৩৭/১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ।
১৪. ‘ বেতাল পঞ্চবিংশতি ‘ গ্রন্থটি লিখেছেন – মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার / ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / রামমোহন রায় ।
উত্তর : ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।
১৫. ‘ অচলায়তন গ্রন্থটি লিখেছেন – ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / চণ্ডীচরণ মুনশী / রামরাম বসু।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
১৬. ‘ বাঙ্গাল গেজেটি মুদ্রণ যন্ত্র ‘ প্রতিষ্ঠা করেন – ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য / উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
উত্তর : গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ।
১৭. নিউ টেস্টামেন্ট নামক গ্রন্থটির গ্রন্থকার ছিলেন – উইলিয়াম কেরি / রামরাম বসু / কাশীরাম দাস / কৃত্তিবাস ।
উত্তর : উইলিয়াম কেরি ।
১৮.’ প্রবোধচন্দ্রিকা ‘ গ্রন্থের গ্রন্থকার ছিলেন – ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / উইলিয়াম কেরি / মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ।
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ।
১৯. ‘ ইউ এন রায় এন্ড সন্স ‘ ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / বিদ্যাসাগর / উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী / সুকুমার রায় ।
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
২০. বঙ্গদর্শন পত্রিকার সম্পাদনা করেন – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / কাশীরাম দাস / উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
উত্তর : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।
২১. এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় / উইলিয়াম জোনস / উইলিয়াম কেরি / উইলিয়াম ব্রুক ।
উত্তর : স্যার উইলিয়াম জোনস ।
২২. আলেকজান্ডার পেডলার প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন – ১৮৭৪/ ১৮৬৭/ ১৮৭৬/ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে ।
২৩. ‘ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স প্রতিষ্ঠা করেন – নীলরতন সরকার / মহেন্দ্রলাল সরকার / আলেকজান্ডার পেডলার / রসিকলাল দত্ত ।
উত্তর : মহেন্দ্রলাল সরকার ।
২৪. ‘ University College of Science ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৯২৪/১৯১৬/১৯১৩/১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ।
২৫. জগদীশচন্দ্র বসু পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগদান করেন – ১৮৮৪/ ১৮৮৭/ ১৮৬৫/ ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
২৬. বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় – ১৯১০/১৯১৭/১৯১৩/১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ।
২৭. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় – ১৯০৫/১৯০৭/১৯০৮/১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ।
২৮. শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন – রামমোহন রায় / প্রফুল্ল চন্দ্র রায় / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / বঙ্কিমচন্দ্র চ্যাটার্জী ।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
২৯. বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৯১৮/১৯১৫/১৯৬০/১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ।
উত্তর : ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ।
৩০. ‘ Society For the Promotion of Technical Education ‘ প্রতিষ্ঠা করেন – তারকনাথ পালিত / নীলরতন সরকার / রাসবিহারী ঘোষ / জগদীশচন্দ্র বসু ।
উত্তর : তারকনাথ পালিত ।
স্তম্ভ মেলাও :
১.
ক স্তম্ভ | খ স্তম্ভ |
1. ক্যালকাটা গেজেট প্রেস। | a. ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ |
2. হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণ। | b. মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার |
3. উইলিয়াম কেরির মৃত্যু। | c. ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ |
4. বত্রিশ সিংহাসন। | d. ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দ |
উত্তর : 1 – c, 2 – a, 3 – d, 4 – b
২.
ক স্তম্ভ | খ স্তম্ভ |
1. বর্ণপরিচয়। | a. ১৮৬৩ |
2. অচলায়তন। | b. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী |
3. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। | c. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
4. ছেলেদের রামায়ণ। | d. বিদ্যাসাগর |
উত্তর : 1 – d, 2 – c, 3 – a, 4 – b
একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১. ‘ A Grammar of the Bengali language ‘ কত খ্রিস্টাব্দে রচিত হয় ?
উত্তর : ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ।
২. বাংলার ছাপাখানার বিকাশ কে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ?
উত্তর : চারটি ।
৩. আধুনিক ছাপাখানার জনক কাকে বলা হয় ?
উত্তর : জোহান গুটেনবার্গ ।
৪. বেঙ্গল গেজেট কে প্রকাশ করেন ?
উত্তর : অগাস্টাস হিকি ।
৫. ইন্ডিয়া গেজেট কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর : ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে ।
৬. প্রথম বাংলা-ইংরেজি অভিধান কোনটি ?
উত্তর : The Indian Vocabulary ।
৭. শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কবে স্থাপিত হয় ?
উত্তর : ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ।
৮. ‘ বর্ণপরিচয় ‘ কার লেখা ?
উত্তর : ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।
৯. সংস্কৃত প্রেস কবে স্থাপিত হয় ?
উত্তর : ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে ।
১০. রেভারেন্ড জেমস লং এর মতে মুদ্রণ ও শিক্ষার সম্পর্ক ___________ এর মত ।
উত্তর : শিব ও শক্তি ।
১১. ‘ রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : রামরাম বসু ।
১২. ‘ হিতোপদেশ ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ।
১৩. ‘ বাংলা ব্যাকরণ ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : রামমোহন রায় ।
১৪. ‘ স্ত্রী শিক্ষা বিধায়ক ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : রাধাকান্ত দেব ।
১৫. লর্ড ওয়েলেসলি বুঝেছিলেন __________ছাড়া কখনই কলেজেও শিক্ষা সম্পন্ন হতে পারে না ।
উত্তর : উৎকৃষ্ট গ্রন্থাগার ।
১৬. ‘ সীতার বনবাস ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।
১৭. ‘ শেষের কবিতা ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
১৮. বটতলায় ছাপার যন্ত্র কবে স্থাপিত হয় ?
উত্তর : ১৮১৮-২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ।
১৯. ‘ ঈশপের গল্প ‘ গ্রন্থটির সম্পাদকের নাম কি ?
উত্তর : রামকমল সেন ।
২০. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জন্ম কত খ্রিস্টাব্দে ?
উত্তর : ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ।
২১. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পৈতৃক নাম কি ছিল ?
উত্তর : কামদারঞ্জন রায় ।
২২. ‘ সখা ‘ কর লেখা ?
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
২৩. ‘ গুপী গাইন বাঘা বাইন ‘ কার লেখা ?
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
২৪. ‘ ছেলেদের রামায়ণ ‘ কার লেখা ?
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ।
২৫. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছাপাখানার নাম কি ছিল ?
উত্তর : ইউ এন রায় এন্ড সন্স ।
২৬. ম্যালেরিয়ার জীবাণু সংক্রমণ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য কে নোবেল পুরস্কার পান ?
উত্তর : রোনাল্ড রস ।
২৭. বেঙ্গল কেমিক্যাল কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর : প্রফুল্ল চন্দ্র রায় , ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ।
২৮. ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর: ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ।
২৯. ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স এর প্রথম অধিকর্তা কে ছিলেন ?
উত্তর : প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় ।
৩০. কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের প্রথম পালিত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক কে ছিলেন ?
উত্তর : সি ভি রমন ।
৩১. বসু বিজ্ঞান মন্দির কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর : ১৯১৭ ।
৩২. বসু বিজ্ঞান মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর : জগদীশচন্দ্র বসু ।
৩৩. ‘Society for the promotion of technical education ‘ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : তারকনাথ পালিত ।
৩৪. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর : ১৯০৬ ।
৩৫. বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর বর্তমান নাম কি ?
উত্তর : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ।
৩৬. শান্তিনিকেতন কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর : ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর ।
৩৭. শান্তিনিকেতন কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
৩৮. বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তর : ১৯১৮ ।
৩৯. শান্তিনিকেতনে কোন দিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় ?
উত্তর : বুধবার ।
৪০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে বিশ্বভারতী এর অর্থ কি ?
উত্তর : বিশ্বমানবতাবাদ ।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন :
১. বাংলা ছাপাখানার বিকাশ কে ক ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি ?
উত্তর :
বাংলা ছাপাখানার বিকাশ কে চার ভাগে ভাগ করা যায় –
1. প্রস্তুতি যুগ
2. আদিযুগ ( সূচনা পর্ব , বিকাশ পর্ব , বিস্তার পর্ব )
3. মধ্যযুগ
4. আধুনিক যুগ ।
২. ‘ বিদ্যাসাগর সার্ট ‘ কাকে বলা হয় ?
উত্তর : বাংলা মুদ্রণ এবং প্রকাশনায় ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর নাম স্মরণীয় । তাঁর ‘ বর্ণপরিচয় ‘ গ্রন্থটি প্রকাশ মুদ্রণের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা । তাঁর বাংলার মুদ্রাক্ষর ‘ বিদ্যাসাগর সার্ট ‘ নামে পরিচিত ।
৩. শিক্ষা বিস্তারে রামরাম বসু এবং মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার এর ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : রামরাম বসুর ‘ রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র ‘ , ‘ লিপিমালা ‘ এবং মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার এর ‘ বত্রিশ সিংহাসন ‘ , ‘ প্রবোধ চন্দ্রিকা ‘ , ‘ হিতোপদেশ ‘ প্রভৃতি বাংলা গদ্য সাহিত্যের গ্রন্থ গুলি বিভিন্ন কলেজের পাঠ্যবই ছিল ।
৪. বাংলা গদ্য সাহিত্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : বাংলা গদ্য সাহিত্যের উজ্জ্বল এবং শিল্পময় করে তুলেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।তাঁর ‘ বেতাল পঞ্চবিংশতি ‘ , ‘ বোধোদয় ‘ , ‘ কথামালা ‘ , ‘ শকুন্তলা ‘ প্রভৃতি গ্রন্থ গুলি শিক্ষার প্রসারে ছিল অনবদ্য । তিনি গদ্য ভাষায় ছন্দস্রোত এনেছিলেন ।
৫. ‘ ইউ এন রায় এন্ড সন্স ‘ সম্পর্কে লেখ ।
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ৭ নম্বর শিব নারায়ণ দাস লেনে নতুন ভাড়াবাড়ি নিয়ে ইউ এন রায় এন্ড সন্স নামে নতুন ছাপাখানা খোলেন । এটাই ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ভালো বই ছাপার প্রেস ।
৬. বাংলা কারিগরি শিক্ষার বিকাশে শ্রীরামপুর কলেজের অবদান লেখ ।
উত্তর : আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার চর্চা শুরু হয়েছিল প্রথম এই কলেজে । ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর ত্রয়ীর নেতৃত্বে শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে জন্ম ম্যাক নামে এক রসায়নবিদ রসায়নের মৌলিক তত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষাদান শুরু করেন । তাঁর রচিত বাংলা ভাষায় রসায়ন বিদ্যা সম্পর্কিত গ্রন্থটি ভারতীয় ভাষায় প্রথম রসায়ন গ্রন্থ ।
৭. বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা কি ছিল ?
উত্তর : ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠ এই কলেজে রসায়নবিদ্যা , পদার্থবিদ্যা , প্রাণিবিদ্যার চর্চা শুরু হয় । কলকাতা মেডিকেল কলেজে ইউরোপের পণ্ডিতরা অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হন । এদের মধ্যে এ্যানাটমী এবং মেডিসিনের অধ্যাপক ছিলেন এইচ এইচ গুডেভ , রসায়নে ছিলেন উয়িলিয়াম ব্রুক , সার্জারিতে ছিলেন সি সি এগারটান ।
৮. বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের অবদান লেখ ।
উত্তর : ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের উদ্যোগে তৈরি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স প্রতিষ্ঠানটির একটি নতুন ক্যাম্পাসের জন্য বিধানচন্দ্র রায় যাদবপুরে জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছিল । এই প্রতিষ্ঠানে এক্স রশ্মী , আলোকবিজ্ঞান , চুম্বকত্ব , রমন ক্রিয়া প্রভৃতি বিষয়ে নানা গবেষণা হয় ।
৯. বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স এর ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের নেতৃত্বে কলকাতায় এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । লন্ডনের রয়াল ইনস্টিটিউশন এবং ব্রিটিশ ইনস্টিটিউশনের মত গবেষণা এবং বিজ্ঞান চর্চার বিকাশ এর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় । এর প্রথম অধিকর্তা ছিলেন প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় । পরবর্তীকালে ডঃ নীলরতন সরকার , জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ , বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু এই পদে নিযুক্ত হন ।
১০. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কিভাবে গঠিত হয়েছিল ?
উত্তর : দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিদেশি সরকারের প্রভাব মুক্ত করতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় পুরোপুরি জাতীয় আদর্শ আনার জন্য ৯২ জন সদস্যকে নিয়ে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় । গৌরী পুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী 5 লক্ষ টাকা দানের প্রতিশ্রুতি দেন । সুবোধ বসুমল্লিক, স্যার তারকনাথ পালিত , রাসবিহারী ঘোষ এই পরিষদে প্রচুর অর্থ দান করেন ।
১১. ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের মত কি ছিল ?
উত্তর : স্বামীজি পেয়েছিলেন গণশিক্ষা । ঔপনিবেশিক রা কখনোই সফল মানুষের শিক্ষার ব্যবস্থা করবে না এটি তাঁর জানা ছিল । সাধারণ মানুষদের শিক্ষার জন্য তিনি এক অভিনব কথা বলেছিলেন- এরা শিক্ষার জন্য এগিয়ে আসবে না , শিক্ষাকে এদের কাছে নিয়ে যেতে হবে ।
১২. ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত কি ছিল ?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝেছিলেন ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় মানুষের চারিত্রিক বলিষ্ঠতা চিত্তের প্রসারতা এবং মনের সার্বিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে । ‘ শিক্ষার হেরফের ‘ নামক একটি প্রবন্ধে তিনি বলেছেন ইংরেজি শিক্ষা ভারতীয় জীবনে অসার্থক এবং অনুপোযোগী । তিনি প্রাচ্য শিক্ষার সাথে পাশ্চাত্য শিক্ষার মেলবন্ধনের কথা বলেছেন । তিনি প্রায় ১৩০ টি প্রবন্ধে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ধারণার প্রকৃতি ও ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা করেছেন ।
১৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি উদ্দেশ্যে শান্তিনিকেতন কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?
উত্তর : প্রচলিত স্কুলের চার দেওয়ালের মধ্যে শিক্ষালাভের তিক্ত অভিজ্ঞতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছিল । তাঁর মনে হয়েছিল শিক্ষাকে প্রকৃতি থেকে যদি আলাদা করে দেওয়া হয় তাহলে শিশুদের মনের বিকাশ ঘটে না । মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের সিংহদের কাছ থেকে ২০ বিঘা জমি কিনে ছাতিম গাছের তলায় একটি বাড়ি তৈরি করে নাম দিয়েছিলেন ‘ শান্তিনিকেতন ‘ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে এখানে এসে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
১৪. বিদ্যালয় শিক্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের ধারণা কি ছিল ?
উত্তর : ‘ আশ্রমের রূপ ও বিকাশ ‘ প্রবন্ধ এ রবীনাথ ঠাকুর বলেছেন ‘ শিক্ষা হবে প্রতিদিনের জীবনযাত্রার একটি অঙ্গ , চলবে তার সঙ্গে এক তালে এবং এক সুরে ‘ । তিনি মনে করতেন বই পড়াটাই আসল শিক্ষা এই অন্ধ সংস্কার যেন ছাত্রদের মধ্যে না গড়ে ওঠে । তিনি আরো মনে করতেন প্রকৃতির কাছ থেকে ছাত্ররা যা শিখবে সেটাই তাদের আসল শিক্ষা ।
১৫. বিশ্বভারতীতে বুধবার কে সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলা হয় কেন ?
উত্তর : সাধারণত আমরা যেমন রবিবারকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করি শান্তিনিকেতনে বুধবারকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয় । আদি ব্রাহ্মসমাজের বুধবার ছিল উপাসনার দিন । মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাই বুধবার দিনটিকে বিদ্যালয় এবং বিশ্বভারতীতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলে স্থির করেন ।
বিশ্লেষণমূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন :
১. ছাপাখানার বিকাশের মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগ সম্পর্কে লেখ ।
উত্তর :
মধ্যযুগ : ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরির মৃত্যুকে আদি যুগের শেষ এবং মধ্যযুগের শুরু বলে মনে করা হয় । ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে চার্লস মেটকাফ কর্তৃক মুদ্রণ যন্ত্রের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে ছাপাখানার এবং প্রকাশনায় জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল । বাংলায় মুদ্রণ এবং প্রকাশনার ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা অনস্বীকার্য । তাঁর ‘ বর্ণপরিচয় ‘ গ্রন্থটি মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা । তাঁর বাংলা মুদ্রাক্ষর বিদ্যাসাগর সার্ট নামে পরিচিত । বিদ্যাসাগর তার বন্ধু মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সঙ্গে যৌথভাবে ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত প্রেস স্থাপন করেন । ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি সংস্কৃত প্রেস এর মালিক হন ।
আধুনিক যুগ : বিংশ শতক থেকে শুরু হয় প্রকাশনার আধুনিক যুগ ।
২. ছাপাখানার বিকাশে ব্যবসায়িক উদ্যোগ সম্পর্কে লেখ ।
উত্তর : ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা গেজেট প্রেস স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কলকাতা সমগ্র ভারতবর্ষের মুদ্রণ কেন্দ্রে পরিণত হয় । ‘ ক্যালকাটা গেজেট প্রেস ‘ এ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুদ্রণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম চলত । অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ হওয়ার আগেই কলকাতায় ক্রনিকল প্রেস , পোস্ট প্রেস আরো নানা কোম্পানির প্রেস স্থাপিত হয় । বাংলা ছাপাখানার বিকাশে ক্ষেত্রে কাগজপত্রের পাশাপাশি পঞ্জিকা, ভারতীয় ও ইউরোপীয় ইতিহাসের ঘটনাবলী নিয়ে লেখা বই , বিভিন্ন ভ্রমণ ও আইনগ্রন্থ , চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত বই , কবিতা , সাহিত্য , নাটকের বই , ব্যাকরণ এবং বিভিন্ন রকমের অভিধান ছাপাখানা গুলি থেকে ছাপা হতো । ছাপাখানার মালিকরা নানা বই ছাপিয়ে তাদের ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ।
৩. ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে জন্ম হয় উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর । তার পৈতৃক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায় । জমিদার হরিকিশোর রায়চৌধুরী তাকে দত্তক নেন এবং তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী । প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন । ব্রাহ্মসমাজ এর সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে নানা রকম পারিবারিক সমস্যা সৃষ্টি হয় । ছাত্রাবস্থায় তার লেখা ‘ সখা ‘ , ‘ সাথী ‘ , ‘ মুকুল ‘ প্রভৃতি নানা রকম লেখাগুলি বালক নামক মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত হতো । তিনি ছিলেন একাধারে চিত্রকর , প্রকাশক , বেহালাবাদক , সুরকার । নানাগুণের অধিকারী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিখ্যাত সন্দেশ পত্রিকা প্রথম প্রকাশ করেন এবং পরবর্তীকালে তার পুত্র সুকুমার রায় এবং তার পৌত্র সত্যজিৎ রায় পত্রিকা সম্পাদনা করতেন । উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর শ্রেষ্ঠ কীর্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ গুপী গাইন বাঘা বাইন ‘ , ‘ টুনটুনির বই ‘ ইত্যাদি । ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে শিবনারায়ণ দাস লেনে নতুন ভাড়া বাড়ি নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘ ইউ এন রায় এন্ড সন্স ‘ নামক এক ছাপাখানা । এটি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ভালো বই ছাপার প্রেস ।
৪. বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স এর প্রতিষ্ঠা এবং উদ্দেশ্য লেখ ।
উত্তর :
প্রতিষ্ঠা : ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের উদ্যোগে তৈরি হয় ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স । লন্ডনের রয়্যাল এসি টিউশন এবং ব্রিটিশ ইনস্টিটিউশনের মত গবেষণা এবং বিজ্ঞান চর্চার বিকাশ এর জন্যই এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করা হয়েছিল । এই প্রতিষ্ঠান প্রথম অধিকর্তা ছিলেন প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় । পরবর্তীকালে ডঃ নীলরতন সরকার , জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ , বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু এই পদ গ্রহণ করেন ।
উদ্দেশ্য : ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের বিভিন্ন উন্নত মানের যন্ত্র এনে এই প্রতিষ্ঠানটিকে সাজানো হয়েছিল । প্রতিষ্ঠানটি প্রধানত দেশীয় হলেও এর একটি জাতীয় ভিত্তি ছিল ।
ফাদার লেফান্ট এবং পেনেরান্ডা , জগদীশচন্দ্র বসু , আশুতোষ মুখার্জী , রজনীকান্ত সেন , নীলরতন সরকার প্ প্রতিষ্ঠানে পন্ডিত রূপে নিযুক্ত ছিলেন । দেশ-বিদেশ থেকে ছাত্ররা এসে এখানে গবেষণার কাজ করতেন । পরবর্তীকালে ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের সংস্পর্শে এসে বিখ্যাত বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন এখানে তাঁর বিজ্ঞানসাধনা প্রথম শুরু করেন ।
৫. বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে বসু বিজ্ঞান মন্দির এর অবদান লেখ ।
উত্তর : ভারতবর্ষে বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু । ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে তিনি যোগদান করেন । ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটিতে ‘ The Polarization of Electric waves ‘ নামক প্রবন্ধ পাঠ করে খ্যাতি লাভ করেন । এরপর তিনি উদ্ভিদবিদ্যা সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা শুরু করেন এবং নতুন তথ্য প্রতিষ্ঠা করেন । ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্র বসুর প্রতিষ্ঠা করেন বসু বিজ্ঞান মন্দির বা ‘ Bose Institute ‘ । এটি ছিল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান । এখানে পদার্থবিদ্যা , রসায়ন বিদ্যা , উদ্ভিদবিদ্যা , অনুজীব বিদ্যা , জৈব পদার্থ বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ে নানা রকম গবেষণা করা হতো ।
৬. বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : স্যার তারকনাথ পালিত , নীলরতন সরকার এবং স্যার রাজবিহারী ঘোষ কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তারকনাথ পালিত এই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন ‘ society for the promotion of technical education ‘
বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা : ওই বছর আপার সার্কুলার রোডে প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট । এখানে কারিগরি ও ফলিত বিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হতো ।
প্রতিষ্ঠানটির অবদান : আর্থিক অসুবিধার কারণে ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্প দুই প্রতিষ্ঠান এক সাথে মিশে যায় । এই ইনস্টিটিউট টি ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি শাখা হিসেবে গড়ে ওঠে । পরবর্তীকালে এটি যাদবপুর কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরিণত হয় । এবং বর্তমানে এটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত ।
৭. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন এ বিদ্যালয় ভাবনার উদ্দেশ্য লেখ ।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঔপনিবেশিক শিক্ষার ধারণা প্রবল সমালোচনা করেছেন । তিনি মনে করতেন ভারতবর্ষের প্রাচীন কালের আশ্রমের শিক্ষা হলো শিক্ষার্থীর আসল শিক্ষা । কালিদাস প্রমুখ কোভিদ রচনায় তপবনের যে শান্ত নির্মল রূপ ফুটে উঠেছে যেখানে গুরু ও গুরুপত্নীর সাথে শিক্ষার্থীরা একই পরিবারভুক্ত হয়ে শিক্ষা লাভ করছে সেটিকেই রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার আদর্শ রূপ বলে মনে করেছেন । ‘ তপোবন ‘ নামক প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন – তপবনের মধ্যে রয়েছে প্রকৃতির শান্ত রূপ । এখানে সূর্য , অগ্নি , বায়ু , জল স্থল , বাতাস এর সাথে চেতনার একটি পরিপূর্ণ যোগ আছে । এই সমস্ত কিছুর সাথে শিক্ষার্থীর মনের যোগ করলে তবেই আসল শিক্ষার বিকাশ ঘটবে ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কে এক পত্রের মাধ্যমে লিখেছেন ” শান্তিনিকেতনে আমি একটা বিদ্যালয় খুলিবার জন্য বিশেষ চেষ্টা করিতেছি । সেখানে ঠিক প্রাচীনকালে ব্রহ্মচর্যের মত সমস্ত নিয়ম থাকবে । “
৮. শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখ ।
উত্তর : ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
বৈশিষ্ট্য :
1. এখানে অবাধ স্বাধীনতা ছিল ।
2. লিঙ্গ , জাতি-ধর্ম-বর্ণের কোন ভেদাভেদ ছিল না ।
3. গৃহপরিবেশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধুর সম্পর্ক এখানে বর্তমান ছিল ।
4. শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারতীয় কৃষ্টি ও আধ্যাত্মিকতা বোধের শিক্ষা এখানে দেওয়া হতো ।
5. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন , খেলাধুলা , অভিনয় সম্মেলন , ভ্রমণের মত সহপাঠক্রমিক কাজে প্রাধান্য দেওয়া হতো ।
6. মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা হতো ।
৯. প্রকৃতি , মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয়ে রবীন্দ্রনাথের ভাবনা কি ছিল বলে তুমি মনে করো ?
উত্তর : প্রাচীনকালের ভারতবর্ষে শিক্ষার আদর্শ রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োগ করতে চেয়েছেন । প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থায় অধ্যায়নকালে গুরুগৃহে বাস এবং ব্রহ্মচর্য পালনের পদ্ধতি ছিল তাতে জীবনের সঙ্গে শিক্ষার সুযোগ ছিল ঘনিষ্ঠ । সেখানে গুরু এবং গুরুপত্নী সাথে শিষ্যরা এক পরিবারভুক্ত হয়ে শিক্ষা অর্জন করতেন । এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর মনুষ্যত্বের পাশাপাশি শিক্ষার বিকাশ সমানভাবে চলত । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করতেন মাটি , জল , বাতাস এবং আলোর সাথে শিক্ষার্থীর যোগ না থাকলে তারা কখনোই পূর্ণ শিক্ষা লাভ করতে পারবে না ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন আমাদের সব থেকে বড় বাধা এই যে শিক্ষার সঙ্গে সমাজের এবং মানুষের কোন যোগ নেই ।
তিনি মনে করতেন আজও আমাদের শিক্ষার জন্য প্রয়োজন বন আর গুরুগৃহ । এখানে বন আমাদের সজীব বাসস্থান । এই শিক্ষার জন্য আশ্রম এর দরকার যেখানে আছে সমগ্র জীবনের সজীব ভূমিকা ।
ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন :
১. ছাপাবইয়ের সাথে শিক্ষা বিস্তারের কি সম্পর্ক ছিল বলে তুমি মনে করো ?
উত্তর : রেভারেন্ড জেমস লং এর মতে মুদ্রণ ও শিক্ষার সম্পর্ক শিব ও শক্তির মত । শিক্ষা বিস্তারের সাথে ছাপা বইয়ের একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে । এক্ষেত্রে শ্রীরামপুর মিশনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য । রামরাম বসুর ‘ রাজা প্রতাপাদিত্য রাজা ‘ , ‘ লিপিমালা ‘ , মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার এর ‘ বত্রিশ সিংহাসন ‘ , ‘ প্রবোধ চন্দ্রিকা ‘ , ‘ হিতোপদেশ ‘ , চণ্ডীচরণ মুনশী এর ‘ তোতা ইতিহাস ‘ প্রভৃতি গ্রন্থগুলি কলেজের পাঠ্যবই হিসাবে ব্যবহৃত হতো । শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত বাংলায় ‘ রামায়ণ ‘ , ‘ মহাভারত ‘ , ভারতচন্দ্রের ‘ ‘অন্নদামঙ্গল’ শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক হিসেবেই নয় বাংলার ঘরে ঘরে তা পড়া হতো ।১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে ‘স্কুল বুক সোসাইটি ‘ । এখানে ছাত্র দের পাঠোপযোগী ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় নানাপ্রকার পুস্তক প্রণয়ন ও মুদ্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল । ডেভিড হেয়ারের সহযোগিতায় রাজা রামমোহন রায় ‘ বাংলা ব্যাকরণ ‘ এবং ‘ জ্যাগ্রাহি ‘ নামে দুইখানা গ্রন্থ রচনা করেন । রাধাকান্ত দেব স্ত্রী শিক্ষার উন্নতির জন্য ‘ স্ত্রী শিক্ষা বিধায়ক ‘ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন ।
মুদ্রিত পুস্তক ও গ্রন্থাগার : লর্ড ওয়েলেসলি বুঝেছিলেন যে উৎকৃষ্ট গ্রন্থাগার ছাড়া কখনই কলেজের শিক্ষা পূর্ণতা লাভ করতে পারে না । ওয়েলেসলি শ্রীরঙ্গপত্তমের যুদ্ধে টিপু সুলতান কে পরাজিত করে তাঁর আরবি ও ফারসি গ্রন্থের মূল্যবান গ্রন্থ গুলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের গ্রন্থাগারে সংরক্ষণ করেন । ১৮১৮ সালে কলেজের গ্রন্থাগারে মুদ্রিত ও পান্ডুলিপির সংখ্যা বেড়ে প্রায় সাড়ে এগারো হাজার হয়েছিল । এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছিল ছাত্র দের পাঠ্যপুস্তক ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত গ্রন্থ ও শিক্ষার প্রসার : বাংলা গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব । তাঁর রচিত ‘ বেতাল পঞ্চবিংশতি ‘ , ‘ বোধোদয় ‘ , ‘ কথামালা ‘ , ‘ বর্ণপরিচয় ‘ , ‘ সীতার বনবাস ‘ প্রভৃতি গ্রন্থ গুলি শিক্ষার প্রসারে ছিল অনবদ্য । তিনি গদ্যভাষায় ছন্দস্রোত এনেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত মুদ্রিত গ্রন্থ এবং শিক্ষার প্রসার : বাংলার শিক্ষার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুদ্রিত গ্রন্থ গুলি এক অসামান্য ভূমিকা পালন করে । শিশুপাঠ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্তর পর্যন্ত শিক্ষা বিস্তারে দিগন্ত উন্মোচিত করে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ । তাঁর রচিত ‘ অচলায়তন ‘ , ‘ ডাকঘর ‘ , ‘ বিসর্জন ‘ , ‘ শেষের কবিতা ‘ , ‘ নৌকাডুবি ‘ , ‘ রক্তকরবী ‘ , ‘ গোরা ‘ প্রভৃতি উপন্যাস গুলির ভূমিকা শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে অসামান্য ।
ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ : ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা গেজেট প্রেস স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কলকাতা সমগ্র ভারতবর্ষের মুদ্রণ কেন্দ্রে পরিণত হয় । ‘ ক্যালকাটা গেজেট প্রেস ‘ এ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুদ্রণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম চলত । অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ হওয়ার আগেই কলকাতায় ক্রনিকল প্রেস , পোস্ট প্রেস আরো নানা কোম্পানির প্রেস স্থাপিত হয় । বাংলা ছাপাখানার বিকাশে ক্ষেত্রে কাগজপত্রের পাশাপাশি পঞ্জিকা, ভারতীয় ও ইউরোপীয় ইতিহাসের ঘটনাবলী নিয়ে লেখা বই , বিভিন্ন ভ্রমণ ও আইনগ্রন্থ , চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত বই , কবিতা , সাহিত্য , নাটকের বই , ব্যাকরণ এবং বিভিন্ন রকমের অভিধান ছাপাখানা গুলি থেকে ছাপা হতো । ছাপাখানার মালিকরা নানা বই ছাপিয়ে তাদের ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ।
শ্রীরামপুর মিশন : প্রধানত ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও এই প্রেস থেকে বিভিন্ন গ্রন্থ , সরকারি নিলাম , ইশতেহার , বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে থাকে ।
২. বাংলায় বিজ্ঞান এবং কারিগরি শিক্ষার বিকাশ কিভাবে ঘটেছিল ?
উত্তর :
বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ : বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শ্রীরামপুর কলেজ , কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ । এছাড়াও ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স , আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস এর বসু বিজ্ঞান মন্দির এর ভূমিকা উল্লেখ যোগ্য । সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর সম্পাদিত বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ‘ ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা ‘ নামক রচনায় লিখেছেন , ” বিজ্ঞান স্বদেশী হইলে আমাদের দাস হইত , বিদেশি হইয়া আমাদের প্রভূ হইয়াছে ” । কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালে রোনাল্ড রস ম্যালেরিয়ার জীবাণু সংক্রমণ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পান । স্যার উইলিয়াম জোন্স প্রতিস্থিত ‘এশিয়াটিক সোসাইটির ‘ ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য । পন্ডিত রাধানাথ শিকদার গণিত শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ার মাপ নির্ধারণ করেছিলেন ।
শ্রীরামপুর কলেজ : আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার চর্চা শুরু হয়েছিল এই কলেজে । ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর ত্রয়ী এর উদ্যোগে তৈরি হয় এই কলেজ । ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে জন ম্যাক নামে এক রসায়নবিদ রসায়নের মৌলিক তত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষাদান শুরু করেন । তাঁর রচিত বাংলা ভাষায় ‘ রসায়নবিদ্যা ‘ সম্পর্কিত গ্রন্থটি ভারতীয় ভাষায় প্রথম রসায়ন গ্রন্থ ।
কলকাতা মেডিকেল কলেজ : ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় । এই কলেজে রসায়নশাস্ত্র , পদার্থবিদ্যা এবং প্রাণিবিদ্যার চর্চা শুরু হয় । ইউরোপের নানা জ্ঞানীগুণী পণ্ডিতরা এই কলেজে অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত ছিলেন । এদের মধ্যে এ্যানাটমী এবং মেডিসিনের অধ্যাপক ছিলেন এইচ এইচ গুডেভ , রসায়নে ছিলেন উয়িলিয়াম ব্রুক , সার্জারিতে ছিলেন সি সি এগারটান ।
প্রেসিডেন্সি কলেজ : প্রেসিডেন্সি কলেজ এর মাধ্যমে বিজ্ঞানচর্চায় বিশেষত রসায়নশাস্ত্র চর্চার বিশেষ প্রসার হয়েছিল ।১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার পেডলার প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন । এই কলেজের রসায়নশাস্ত্রে আরো এক বিশাল দিকপাল ছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় । ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে এশিয়াটিক সোসাইটির জানালে তিনি ‘ মারকিউরাস নাইট্রাইট ‘ নামে একটি নতুন মার্কারি কমপাউন্ড তৈরীর পদ্ধতি সম্পর্কে প্রবন্ধ লেখেন । এ বিষয়ে তাকে সাহায্য করেন চন্দ্রভূষন ভাদুড়ি , জ্যোতি ভূষন ভাদুড়ি , রসিক লাল দত্ত প্রমুখ ছাত্র ।১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেমিক্যাল ।
এছাড়া ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকার প্রতিষ্ঠা করেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স । এই প্রতিষ্ঠানটি বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মত গবেষণা ও বিজ্ঞান চর্চার বিকাশ এর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ।
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রতিষ্ঠা করেন বসু বিজ্ঞান মন্দির । এখানে পদার্থবিদ্যা , রসায়ন বিদ্যা , উদ্ভিদবিদ্যা , অনুজীব বিদ্যা , জৈব পদার্থ বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ে নানা রকম গবেষণা করা হতো ।
বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ : উনিশ শতকের শিক্ষা ব্যবস্থার ঝোঁক ছিল বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার উপর । কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে যোগেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ একটি অর্থভান্ডার গড়ে তোলেন । বিদেশে গিয়ে ছাত্ররা যাতে কারিগরি শিক্ষা লাভ করতে পারে তার জন্য এই অর্থভান্ডারথেকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করা হতো । তারকনাথ পালিত নীলরতন সরকার প্রমুখেরা মনে করতেন ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কারিগরি শিক্ষার উপর । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তারকনাথ পালিত প্রতিষ্ঠা করেন society for the promotion of technical education বা কারিগরি শিক্ষা উন্নয়ন সমিতি । ওই একই বছর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল Bengal Technical Institute । কারিগরি শিক্ষাকে গণমুখী করার জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ভারতে রেল ইঞ্জিন আসার পর টিটাগড়ের স্ গোলকচন্দ্রকে অনুরূপ একটি ইঞ্জিন নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । আমাদের দেশের প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন তিনি প্রথম নির্মাণ করেন । ভারতে ইলেকট্রিক টেলিগ্রাফ লাইন বসানোর ক্ষেত্রে শিবচন্দ্র নন্দীর অবদান অনস্বীকার্য । বাংলায় কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠা ও প্রসারে পি এম বাগচি অ্যান্ড কোম্পানির অবদান অনস্বীকার্য । এই কোম্পানি প্রাচ্যে প্রথম কালী, সুগন্ধি প্রসাধন, রবার্ট স্টাম্প তৈরি করে । ১৮৮৩ থেকে ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোম্পানিই দ্রব্য গুলি তৈরি করে ভারতে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করে ।
৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী ভাবনা সম্পর্কে লেখ ।
উত্তর :
বিশ্বভারতী ভাবনা: শান্তিনিকেতন আশ্রম বিদ্যালয় যখন পরিপূর্ণ এবং সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে ছাত্ররা এসে পড়াশোনা করছে ঠিক তখনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে সম্পূর্ণ একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ভাবনা জাগে । তিনি বলেছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন প্রাদেশিকতা এবং সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না । শিক্ষাবিদ এন্ড্রুজ এর সাথে আলোচনা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের পূজাবকাশ এ ‘ বিশ্বভারতী ‘ পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেন ।
বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা : ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় । ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে এখানে প্রথম কাজ শুরু হয় । তখন পাঠভবন এর পরের ধাপ কেই বলা হত ‘ বিশ্বভারতী ‘ ।
বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য : ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীর ভাবনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গ্রাস করেছিল । বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন । তাঁর মত বিশ্লেষণ করে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিনটি উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় ।
ভারতীয় ঐতিহ্যের মিলন সেতু রচনা : ভারতবর্ষের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যে মনের ঐক্য ছিল তা বিনষ্ট হয়েছে বলে কবি মনে করেছেন ।
বিদ্যার মুখ্য কাজ এবং গৌণ কাজ : শিক্ষার প্রকৃত ক্ষেত্র সেইখানেই যেখানে বিদ্যার উদ্ভবনা চলে । কবির ভাষায় ” বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য কাজ বিদ্যার উৎপাদন , তাহার গৌণ কাজ সেই বিদ্যাকে দান করা ” ।
শ্রীনিকেতনের প্রতিষ্ঠা : রবীন্দ্রনাথের ভাবনা তথা বিশ্বভারতীর ভাবনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় বিশ্বভারতী কে কবি দুটি শাখায় বিভক্ত করেছেন –
১ । শান্তিনিকেতন : যেখানে বিদ্যা উৎপাদন এবং দান
২ । শ্রীনিকেতন : যেখানে দেশের মানুষের জীবনযাত্রা প্রতিফলন । যেমন : উৎকৃষ্ট আদর্শ চাষ, গোপালন , কাপড় বোনা প্রভৃতি । পর্যালোচনা : সবকিছু বিভেদের ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠা হল ‘ বিশ্বভারতী ‘ । কবি ‘ মানুষের ধর্ম ‘ গ্রন্থে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে , ‘ বিশ্বভারতী ‘ এবং ‘ বিশ্বমানবতাবাদ ‘ একই অর্থবোধক ।
পর্যালোচনা : সবকিছু বিভেদের ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠা হল ‘ বিশ্বভারতী ‘ । কবি ‘ মানুষের ধর্ম ‘ গ্রন্থে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে , ‘ বিশ্বভারতী ‘ এবং ‘ বিশ্বমানবতাবাদ ‘ একই অর্থবোধক ।