কবি পরিচিতি
বাংলা সাহিত্যে রম্যরচনাকার ও বিশিষ্ট কবি হিসাবে তারাপদ রায় একটি বিখ্যাত নাম। শিশুসাহিত্যে ডোডো ও তাতাই চরিত্রের তিনিই স্রষ্টা। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল তোমার প্রতিমা, নীলদিগন্তে এখন ম্যাজিক,কোথায় যাচ্ছেন তারাপদবাবু, দারিদ্র্যরেখা, জলের মতো কবিতা ইত্যাদি।
কবিতার সারাংশ
একটি চড়ুই পাখি কবিতায় কবি তার ছোট্ট ঘরে একটি ভেন্টিলেটরের মধ্যে চড়ুই পাখির বাসস্থান সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন| সাধারণত মানুষের ঘরের ভেন্টিলেটরে খড় কুটু জমা করে এনে বাসা বেঁধে বসবাস করে, ঠিক সে রকম ভাবেই কবিরঘরেও একটি চড়ুই পাখি বসবাস করত |কবির আশেপাশে দাস বাবুদের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও চড়ুই পাখি টা অন্য কারোর বাড়িতে না থেকে কবি বাড়িতেই থাকতো আর কবি যখন তার ঘর বন্ধ করে বাইরে বেরিয়ে যেত চড়ুই পাখিটা তখন ঘরের মধ্যে ঢুকে কিচিরমিচির করে কবির বই খাতার উপরে গিয়ে বস্তু আবার কখনো কবির সারা ঘরে কিচিরমিচির করে বেড়াতো|
হাতে কলমে
১.১ তারাপদ রায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর। তারাপদ রায় ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর। তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘তোমার প্রতিমা’ এবং ‘দারিদ্র্যরেখা।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
২.১ কবিতায় চড়ুই পাখিটিকে কোথায় বাসা বাঁধতে দেখা যায়?
উত্তর। কবিতায় চড়ুই পাখিটিকে কবির ঘরে বাসা বাঁধতে দেখা যায়।
২.২ চড়ুই পাখি এখান-সেখান থেকে কী সংগ্রহ করে আনে?
উত্তর। চড়ুই পাখি এখান-সেখান থেকে খড়কুটো, ধান সংগ্রহ করে আনে।
২.৩ কবির ঘরে কোন কোন জিনিস চড়ুই পাখিটির চোখে পড়ে?
উত্তর। কবির ঘরের জানলা, দরজা, টেবিলের ফুলদানি, বইখাতা চড়ুই পাখিটির চোখে পড়ে।
২.৪ ইচ্ছে হলেই চড়ুই পাখি কোথায় চলে যেতে পারে?
উত্তর। ইচ্ছে হলেই চড়ুই পাখি কবির ঘর ছেড়ে এপাড়ায় ওপাড়ায় পাল কিংবা বোসেদের বাড়ি চলে যেতে পারে।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৩.১ ‘চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে’—চড়ুই পাখিকে এখানে ‘চতুর’ বলা হলো কেন?
উত্তর। চড়াই এক ক্ষুদ্র পাখি। গৃহস্থের বাড়িতেই তার বাস। কবি চড়াই পাখির আচার-আচরণকে প্রত্যক্ষ করে মনে করেছেন সে অত্যন্ত চতুর। চড়াই পাখি মানুষের গৃহে বাসা বেঁধে তাদের সবকিছু উপভোগ করে কিন্তু তার জন্য তারা অতিরিক্ত মেহনত করে না। চতুর পাখিরা বুদ্ধিবলেই তাদের কার্যসিন্ধি করে বলে একথা বলা হয়েছে।
৩.২ কবিতায় বিধৃত চিত্রকল্পগুলি দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো।
উত্তর। কবিতায় ব্যবহৃত চিত্রকল্পগুলি হলো—
(১) অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে যেই সেও ফেরে। -এর সরলার্থ হলো সন্ধ্যা হলে চড়াই বাসায় ফেরে। (২) ‘কৌতূহলী দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে’-এর সরলার্থ হলো চড়ুই মানুষের আচার-আচরণ অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করে।(৩) ‘আবার কার্নিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার’-এর সরলার্থ হলো মজার তাচ্ছিল্য সহকারে কার্নিশ করে।
৩.৩ হয়তো ভাবে চড়ুই পাখি কী ভাবে বলে কবি মনে করেন?
উত্তর। কবি মনে করেন চড়াই পাখি ভাবে যে কবি যখন চলে যাবেন আর তাঁর ঘরদোর, জানালা, টেবিলের ফুলদানি,বইখাতা সব তারই হবে, বিধাতা তাকেই সব দিয়ে দেবেন।
৩.৪ ‘আবার কার্নিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার …:-তাচ্ছিল্যভরা মজার চাহনিতে তাকিয়ে চড়ুই কী ভাবে?
উত্তর। কার্নিশে বসে তাচ্ছিল্যভরা মজার চাহনিতে তাকিয়ে চড়াই ভাবে নিতান্ত মায়ার শরীর বলে সে কবির এই বাড়িতে বাস করছে। অন্যথায় সে এপাড়া ওপাড়ায় পাল বা বোসেদের বাড়ি চলে যেতে পারে।
৩.৫ চড়ুই পাখিকে কেন্দ্র করে কবির ভাবনা কীভাবে আবর্তিত হয়েছে, তা কবিতা অনুসরণে আলোচনা করো।
উত্তর। একটি চতুর চড়াই পাখি কবির ঘরে বাসা বাঁধে। সন্ধ্যার অন্ধকারে সে বাসায় ফেরে খড়কুটো ও ধান সংগ্রহ করে। সে কিচিমিচি শব্দে ঘর ভরিয়ে দেয়। সে কৌতূহলী দৃষ্টিসহকারে ভাবে কবির অবর্তমানে ওই ঘর, জানালা’দোর, টেবিলের ফুলদানি, বইখাতা ভগবান সবই তাকে দিয়ে দেবেন। চড়াই কার্নিশে বসে মজায় তাচ্ছিল্যভরে ভাবে মায়ার শরীর বলে সে পড়ে আছে নাহলে অন্য পারে। কিন্তু সে যায় না, রাত্রির নির্জন ঘরে কবি আর চড়ুই পাখি একাকী বিরাজ করে।
৩.৬ তবুও যায় না চলে এতটুকু দয়া করে পাখি’—পঙ্ক্তিটিতে কবিমানসিকতার কীরূপ প্রতিফলন লক্ষ করা যায়?
উত্তর। সংকলিত পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে কবির একটি চড়াই পাখির প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। কবির
জীবনের একাকিত্ব দূর করার জন্য চড়াই পাখির উপস্থিতি কবির প্রয়োজন।
৩.৭ ছোট্ট চড়ুই পাখির জীবনবৃত্ত কীভাবে কবিতার ক্ষুদ্র পরিসরে আঁকা হয়েছে তার পরিচয় দাও।
উত্তর। কবিতার ক্ষুদ্র পরিসরে চড়াইপাখির জীবনবৃত্ত সুন্দরভাবে অঙ্কিত। চড়াই কবির ঘরে বাসা বাঁধে। সন্ধ্যায় সে বাসায় ফেরে। খড়কুটো, ধান ইত্যাদি তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কবির সঙ্গে তার মায়ার সম্পর্ক। সে অন্য বাড়িতে ন গিয়ে কবির নির্জন একাকী জীবনে সঙ্গ দেয়।
৩.৮ ‘কৌতূহলী দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে’—চড়ুই পাখির চোখ ‘কৌতূহলী’ কেন? তার চোখে কৰিব সংসারের কোন চালচিত্র ধরা পড়ে?
উত্তর। চড়াই পাখি কবির অনেক আচরণ সম্বন্ধেই জানতে চায়। তাই তার চোখ কৌতূহলী।তার চোখে কবির সংসারের সকল আসবাবপত্র এবং বইখাতার চালচিত্র ধরা পড়ে। সে ভাবে একাকী কবি যদি ঘর ছেড়ে দেন তাহলে সবকিছুই তার হবে এবং সে সেগুলিকে কীভাবে ব্যবহার করবে।
৩.৯ রাত্রির নির্জন ঘরে আমি আর চড়ুই একাকী— পড্ক্তিটিতে ‘একাকী’ শব্দটি প্রয়োগের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর। কবির বাসায় কবি একা, চড়াই অন্য প্রজাতির প্রতিনিধি। তাই মানবজাতির প্রতিনিধি কবি এবং পাখি জগতের প্রতিনিধি চড়াই উভয়ই একাকী।
৩.১০ ‘একটি চড়ুই পাখি’ ছাড়া কবিতাটির অন্য কোনো নামকরণ করো। কেন তুমি এমন নাম দিতে চাও, তা বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর। ‘একটি চড়ুই পাখি’ ছাড়া কবিতার অন্য নামকরণ হতে পারে ‘নির্জনে একাকী’। আমার মনে হয় কবির একাকীত্ব ও নির্জনতাকে প্রাধান্য দেবার জন্য কবি এই কবিতায় অন্য কোনো চরিত্রের অবতারণা করেননি। কবির নির্জন, একাকী ও নিঃসঙ্গ জীবনে চড়াই একটা প্রভাব ফেলে। আবার পাখি সমাজে চড়াই একা। উভয়ের একাকীত্ব এখানে অত্যন্ত প্রকট হওয়ায় ‘নির্জনে একাকী’ নামকরণ চিত্র ব্যঞ্জনাধর্মী হয়ে সার্থকতা লাভ করতে পারে।
৪. নীচের শব্দগুলির প্রকৃতি–প্রত্যয় নির্ণয় করো :
উত্তর। সন্ধ্যা—সম–ধ্যৈ আ কৌতূহলী—কৌতূহল ঈ
দৃষ্টি–দৃশ্ । তি৷
৫. নীচের বাক্যগুলির ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করো :
৫.১ চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে।
উত্তর। সাধারণ বর্তমান কাল।
৫.২ বই-খাতা এসব আমার-ই হবে।
উত্তর। সাধারণ বর্তমান কাল।
৫.৩ আবার নিশে বসে।
উত্তর। সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল।
৫.৪ এই বাজে ঘরে আছি।
উত্তর। ঘটমান বর্তমান কাল।
৫.৫ ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি।
উত্তর। সাধারণ বর্তমান কাল।
৬. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
৬.১ অন্ধকার ঠোটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে যেই সেও ফেরে। (সরল বাক্যে)
উত্তর। অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফিরলেই সে ফেরে।
৬.২ কখনো সে কাছাকাছি কৌতূহলী দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে। (নিম্নরেখাঙ্কিতলিখে বাক্যটি আবার লেখো।)
উত্তর। কখনো সে কাছাকাছি কৌতূহল বিশিষ্ট দুই চোখ মেলে অবাক দৃষ্টিতে দেখে।
৬.৩ আমাকেই দেবেন বিধাতা। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর। বিধাতা আমাকে না দিয়ে পারবেন না।
৬.৪ এই বাজে ঘরে আছি নিতান্ত মায়ার শরীর আমার তাই। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যেহেতু আমার মায়ার শরীর তাই এই বাজে ঘরে আছি।
৬.৫ ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি এ পাড়ায় ও পাড়ায় পালেদের বোসেদের বাড়ি। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যদি ইচ্ছা হয় তাহলে আজই যেতে পারি এপাড়ায় ওপাড়ায় পালেদের বোসেদের বাড়ি।
৭. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো :
উত্তর।
চড়ুই—চড়াই > চড়ুই—স্বরসংগতি।
ধান—ধান্য > ধান—ব্যঞ্জনলোপ।
চোখ-চক্ষু > চোক্খু > চোখ— বর্ণলোপ।
জানলা—জানালা > জানলা স্বরলোপ।
দোর—দুয়ার > দোর— স্বরসংগতি।
ইচ্ছে–ইচ্ছা > ইচ্ছে– স্বরসংগতি।
পাখি—পক্ষী > পক্খি > পাখি—মধ্যস্বরাগম।
৮. ‘চোখ‘ শব্দটিকে পৃথক পৃথক অর্থে ব্যবহার করে বাক্য রচনা করো।
উত্তর।
চোখ (চোখের অসুখ)— অতীনের চোখ উঠেছে বলে আজ সে স্কুলে যায়নি।
চোখ–(নজর রাখা)— অচেনা ছেলেটিকে চোখে চোখে রাখা প্রয়োজন।
চোখ-(ঈর্ষা হওয়া)- কারোর ভালো দেখলেই বীণা বৌদির চোখ ট্যারা।
চোখ (বোধগমা হওয়া) – সংসারের এত উত্থান-পতন দেখেও তোমার চোখ ফুটল না?
অতিরিক্তপ্রশ্নউত্তর
১ চড়ুই পাখি কি দিয়ে তার বাসা বাঁধে ?
উত্তর। চড়ুই পাখি অন্যের বাড়ির ধান খড়কুটো নিয়ে এসে বাসা বাঁধে|
২ কার্নিশে বসে চড়ুই পাখি কি করত ?
উত্তর। কার্নিশে বসে চড়ুই পাখি কবির দিকে তাচ্ছিল দৃষ্টিতে তাকাতো|
৩ কবিতায় চড়ুই পাখির সাথে কবি কার জীবনের তুলনা করেছেন ?
উত্তর। কবি এখানে চড়ুই পাখির সাথে তার নিজের জীবনের তুলনা করেছেন যেমন সারাদিন পর চড়ুই পাখি রাত্রে একাকী থাকে ঠিক তেমনি কবিও সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর রাত্রে একাকী হয়ে পড়েন|
Thx mam tomorrow my exam starts Bengali it’s help me alot thank you so much:) you are doing great job mam thank you so much.. thank you alot